তিন নারীকে যৌন হয়রানির সত্যতা মিলেছে, প্রশিক্ষক বরখাস্ত

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

শরীয়তপুর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের গাড়ি চালনা কোর্সের প্রধান প্রশিক্ষক আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে তিন নারী প্রশিক্ষণার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি। আজ রোববার জেলা প্রশাসকের নির্দেশে তাঁকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

ওই নারীরা প্রতিকার চেয়ে এক মাস আগে অধ্যক্ষের কাছে আবেদন করেন। প্রতিকার না পেয়ে গত সোমবার তাঁরা জাতীয় মহিলা সংস্থায় অভিযোগ দিন। এ নিয়ে আজ ‘তিন নারীকে যৌন হয়রানি’ শিরোনামে প্রথম আলোতে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।

প্রশিক্ষণ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, সরকারের জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো ২০১৭ সালে শরীয়তপুর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কার্যক্রম শুরু করে। ওই কেন্দ্রে বর্তমানে সাতটি কোর্সে ১৫০ জন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছেন। তাঁদের মধ্যে নারী রয়েছেন ৪২ জন। গত জানুয়ারিতে নতুন একটি প্রকল্পের আওতায় ‘মোটর ড্রাইভিং উইথ বেসিক মেইনটেন্যান্স’ কোর্স চালু করা হয়। এই কোর্সের প্রশিক্ষণার্থী ওই তিন নারী। গত সেপ্টেম্বরে তাঁদের চার মাসের কোর্সটি শুরু হয়।

ওই নারীদের অভিযোগ, ভর্তি হওয়ার দুই সপ্তাহ পর থেকেই তাঁরা অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে শুরু করেন। কোর্সের প্রধান প্রশিক্ষক আবদুর রাজ্জাক শ্রেণিকক্ষে, ব্যবহারিক কাজের সময় এবং মাঝেমধ্যে একান্তে ডেকে নিয়ে নানা ধরনের অশালীন মন্তব্য করতেন। যৌনতাসংশ্লিষ্ট নানান ধরনের ইঙ্গিত ও কুপ্রস্তাব দিতেন। প্রথম দিকে ওই নারীরা বিষয়টি নিজেদের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেন। তবে উত্ত্যক্তের মাত্রা বেড়ে গেলে তাঁরা প্রতিকার চেয়ে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষের কাছে গত ২৯ অক্টোবর একটি লিখিত আবেদন করেন। অধ্যক্ষ প্রতিষ্ঠানটির পাঁচজন প্রশিক্ষককে দিয়ে একটি তদন্ত কমিটি করেন। কিন্তু তদন্ত কমিটি এক মাস পেরিয়ে গেলেও বিষয়টি খতিয়ে দেখেনি।

শরীয়তপুর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ সম জাহাঙ্গীর আখতার বলেন, নারী প্রশিক্ষণার্থীদের লিখিত অভিযোগ পেয়ে তদন্ত কমিটি করেছি। কমিটির প্রতিবেদন হাতে পেয়েছি। তাতে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ওই প্রশিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছে।

শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের বলেন, ‘ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। যেখানে সরকার নারীদের স্বাবলম্বী করতে নানা ধরনের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে, সেখানে সরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের একজন প্রশিক্ষক নারীদের অবমাননা করবেন,যৌন হয়রানি করবেন ও প্রশিক্ষণ গ্রহণ বাধাগ্রস্ত করবেন তা মেনে নেওয়া যায় না। বিষয়টি আমার নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।’

তবে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গতকাল আবদুর রাজ্জাক মুঠোফোনে বলেছিলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে দেওয়া অভিযোগ সত্য নয়। ওই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক। কেন তাঁরা এ অভিযোগ দিয়েছেন, তা বুঝতে পারছি না।’