চবিতে ছাত্রলীগের অবরোধ তিন দিনের জন্য শিথিল

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ছাত্রলীগের এক পক্ষের ডাকা অবরোধ তিন দিনের জন্য শিথিল করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের চট্টগ্রামে আগমন উপলক্ষে অবরোধ শিথিল করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ক্যাম্পাসে ট্রেন, বাস সব চলবে। দুই নেতাকে যাঁরা মারধর করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তাপস সরকার হত্যা মামলার আসামি মিজানুর রহমান ও প্রদীপ চক্রবর্তীর নির্দেশেই এ হামলা করা হয়। তাই তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হবে। এ ছাড়া আলোচনা করে পরবর্তী কর্মসূচি জানিয়ে দেওয়া হবে।

আজকের অবরোধের কারণে অন্তত ৫টি বিভাগে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। ক্যাম্পাসে পরিবহন পুল থেকে শিক্ষকদের বাস দেরিতে ছাড়ার কারণে এসব বিভাগে পরীক্ষা হয়নি বলে জানা গেছে। তবে ক্যাম্পাসে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আমানত হলের সামনে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে সংস্কৃত বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র তাপস সরকার খুন হন। আহত হন আরও পাঁচ ছাত্র। এ ঘটনায় ১৭ ডিসেম্বর তাপসের সহপাঠী হাফিজুল ইসলাম হাটহাজারী থানায় হত্যা মামলা করেন। এতে ৩০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১৫ থেকে ২০ জনকে আসামি করা হয়। বর্তমানে আদালতে মামলাটি বিচারাধীন।

গত শুক্রবার মধ্যরাতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই পক্ষ চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ার (সিএফসি) ও ভার্সিটি এক্সপ্রেসের (ভিএক্স) কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের সাত কর্মী আহত হন। সিএফসি শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী ও ভিএক্স সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সদস্যরা বলেন, গতকাল রোববার রাত সাড়ে সাতটায় সিএফসির দুই নেতাকে মারধর করা হয়। হামলাকারীরা সবাই ভিএক্সের অনুসারী। হাটহাজারী উপজেলার এগারো মাইল এলাকায় তাঁদের মারধর করা হয়। এই ঘটনায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্যাম্পাসে অবরোধের ডাক দেয় সিএফসি। মারধরের শিকার ছাত্রলীগের নেতারা হলেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি সুমন নাছির ও আবদুল্লাহ আল নাহিয়ান। হামলাকারীদের আটক না করা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধের ডাক দেয় ছাত্রলীগের এক পক্ষ।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, শুক্রবারের মারামারির ঘটনা তিন দিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সমাধান করতে চাইলেও তা সম্ভব হয়নি। এই ঘটনার জেরে সুমন নাছির ও আবদুল্লাহ আল নাহিয়ানকে একা পেয়ে মারধর করে ভিএক্স। বিষয়টি জানাজানি হলে গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে শাহ আমানত হলের সামনে অবস্থান নেয় সিএফসির অনুসারীরা। এ সময় তাঁরা হলের সামনের সড়ক অবরোধ করে রাখে। পাশাপাশি গোলচত্বরে পুলিশ বক্স, প্রক্টরিয়াল বডির গাড়ি ও পুলিশের চারটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। পরে পুলিশ এসে তাঁদের সরিয়ে দেয়। বর্তমানে ক্যাম্পাসে অন্তত ১০০ পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।