২০৮ জন মুক্তিযোদ্ধাকে গেজেটভুক্ত করতে নির্দেশ

দেশের চারটি জেলার ২০৮ জনকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটে অন্তর্ভুক্ত করতে নির্দেশ দিয়ে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এ রায় দেন।

একই সঙ্গে তাঁদের ভাতা প্রদানের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে ওই নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্ত করায় নিষ্ক্রিয়তা ও ভাতা বন্ধের বৈধতা নিয়ে করা পৃথক আটটি রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে এ রায় দেওয়া হয়। আদালত বলেছেন, মুক্তিযোদ্ধারা যদি অসচ্ছল থাকেন, সেটি রাষ্ট্রের জন্য লজ্জা।

নথিপত্র থেকে জানা যায়, ২০৮ জনের মধ্যে চাঁদপুর জেলার ১৪৯ জন, পাবনার ৪০ জন, কুষ্টিয়ার আটজন ও মাগুরার ১১ জন মুক্তিযোদ্ধা ২০১৬ সালে পৃথক আটটি রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ওই বছরই হাইকোর্ট রুল দেন। রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে আজ রায় দেওয়া হয়।

আদালতে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তৌফিক ইনাম, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী গালিব আমিদ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল অবন্তী নুরুল।

পরে আইনজীবী তৌফিক ইনাম প্রথম আলোকে বলেন, আদালত বলেছেন, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে বারবার কমিটি গঠন ও জামুকা কর্তৃক স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে গেজেটে অন্তর্ভুক্ত করা বা বাদ দেওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি চরম অসম্মান। ২০৮ জনের মধ্যে চাঁদপুরের ১৪৯ জন মুক্তিযোদ্ধার মাসিক সম্মানী ভাতা কোনো কারণ না দেখিয়ে হঠাৎ করেই ২০১৫ সাল থেকে স্থগিত করা হয়। তাঁদের বন্ধ করা ভাতা ওই সময় থেকে চালু করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। অপর ৫৯জন মুক্তিযোদ্ধা গেজেটে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর ভাতা পাবেন।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত প্রথম আলোকে বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা যদি অসচ্ছল থাকেন, সেটি রাষ্ট্রের জন্য লজ্জা। মুক্তিযোদ্ধা ভাতা মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য করুণা নয় বরং এটা তাদের অধিকার-রায় ঘোষণার আগে আদালত এমন অভিমত দেন। ২০৮ জনকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্ত করে ভাতা প্রদানে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। রায় পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে এই নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

রিট আবেদনকারী পক্ষ জানায়, সরকার গঠিত উপজেলা ও জেলা যাচাই-বাছাই কমিটির অনুমোদনের পর অন্য মুক্তিযোদ্ধাদের নামের সঙ্গে ২০৮ জন মুক্তিযোদ্ধার নাম গেজেটে প্রকাশের জন্য ২০০৪ সালে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও জামুকায় পাঠানো হয়। দীর্ঘদিনেও তাঁদের নাম গেজেটভুক্ত না হওয়ায় প্রেক্ষাপটে তাঁরা পৃথক রিট করেন। এর আগে ২০১৫ সাল থেকে কোনো কারণ না দেখিয়ে হঠাৎ করেই চাঁদপুরের ১৪৯ জন মুক্তিযোদ্ধার সম্মানী ভাতা স্থগিত করা হয়। এ নিয়ে তাঁরা পৃথক পাঁচটি রিট করেন।