মেট্রোরেলের সঙ্গে জুতসই শহর চাই

সামছুল হক
সামছুল হক

মেট্রোরেলের নির্মাণ ও পরিচালনার ব্যয় অনেক বেশি। পাতালপথে মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার ব্যয় ওপরের চেয়ে ২-৩ গুণ বেশি। তারপরও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ভর্তুকি দিয়ে মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনা করে। কারণ, মেট্রোরেলকে শুধু পরিবহনব্যবস্থা ভাবা হয় না, এটি আধুনিক নগর-পরিকল্পনার অংশ। যাকে ট্রানজিট ওরিয়েন্টেড ডেভেলপমেন্ট (টোট) বলা হয়। অর্থাৎ মেট্রোকে ঘিরে নগর গড়ে তোলা হয়।

মেট্রোরেল যে পথ দিয়ে যাবে, এর আশপাশে বহুতল ভবন গড়ে উঠবে। স্থানীয় বাসিন্দারা উপকৃত হবে, শহরের ওপর চাপ কমবে এবং মেট্রোরেলের ব্যবহারও বেশি হবে। এখন পর্যন্ত ঢাকায় অবশ্য সেই সমন্বিত পরিকল্পনা এবং সেই অনুসারে নগরায়ণের তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। এখনই এই উদ্যোগ না নিলে মেট্রোরেলের আশানুরূপ সুফল পাওয়া যাবে না।

পরিকল্পনাটা হতে হবে এমন যে সবার ওপরে থাকবে মেট্রোরেল। এর সঙ্গে সমান্তরালভাবে করতে হবে বাসের বিশেষ লেন। বিমানবন্দর থেকে গাজীপুরের জয়দেবপুর পর্যন্ত বাসের বিশেষ লেন নির্মাণের প্রকল্প চলছে। আরও কিছু পথে এই ব্যবস্থা চালু করতে হবে।

মেট্রোরেল ও বাসের বিশেষ লেনের সঙ্গে সংযোগ তৈরি করার জন্য থাকবে সাধারণ বাস। বর্তমানে যেসব বাস আছে, এর যে পরিচালনা পদ্ধতি, তা দিয়ে ওই চাহিদা পূরণ করা যাবে না। তাই দ্রুত মালিকানা ব্যবস্থা সংস্কার করতে হবে। সব সাধারণ বাস অল্প কয়েকটি কোম্পানির অধীনে এনে পরিচালনা করতে হবে। এর বাইরে গলিপথে আধুনিক পদ্ধতির টেম্পো বা লেগুনা ধরনের যান থাকতে পারে। নতুবা মোটরসাইকেল জনপ্রিয় হয়ে যাবে, যা একটা শহরকে অচল করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।

মোদ্দা কথা হচ্ছে, মেট্রো নগরের সবচেয়ে দ্রুতগতির ও নির্ভরযোগ্য বাহন। একেবারে সময় মেনে চলে। শহরটাকে মেট্রোরেলের সঙ্গে জুতসই করা দরকার। এর জন্য রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, সিটি করপোরেশনসহ সরকারের অন্য দপ্তরগুলোকে এখনই তৎপরতা শুরু করতে হবে।

লেখক: অধ্যাপক, পুরকৌশল বিভাগ, বুয়েট