দ্রুত 'বৈষম্য বিলোপ আইন' পাসের দাবি

‘বিশ্ব মর্যাদা দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত জাতীয় নীতি সংলাপ অনুষ্ঠানের বক্তারা। ছবি: সংগৃহীত
‘বিশ্ব মর্যাদা দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত জাতীয় নীতি সংলাপ অনুষ্ঠানের বক্তারা। ছবি: সংগৃহীত

দেশের দলিত জনগোষ্ঠীর জন্য গৃহীত বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ত্বরান্বিত করার জন্য অবিলম্বে প্রস্তাবিত ‘বৈষম্য বিলোপ আইন-২০১৫’ পাস করার দাবি করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ‘বিশ্ব মর্যাদা দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত এক জাতীয় নীতি সংলাপে এ দাবি ওঠে। জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। মানুষে জন্য ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় বাংলাদেশ দলিত পরিষদ ও পরিত্রাণ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

সংলাপের প্রধান অতিথি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, বর্তমান সরকার জাতি–ধর্ম–বর্ণনির্বিশেষে সবার উন্নয়নের জন্য ইতিমধ্যে বিভিন্ন ইতিবাচক উদ্যোগ ও পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। সরকারের নানা উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের আরও মনোযোগী ও আন্তরিক হওয়ার জন্য তিনি অনুরোধ করেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকারের গৃহীত বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী কর্মসূচিতে সমাজের পিছিয়ে পড়া দলিত, অনগ্রসর জাতিগোষ্ঠীর মানুষকে অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে কোনো ধরনের গাফিলতি মেনে নেওয়া হবে না। দলিত জনগোষ্ঠীর বৈষম্য বিলোপ আইন পাসসহ সব ধরনের দাবি প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করবেন।

সংলাপের বক্তারা বলেন, টেকসই উন্নয়নের মূলনীতি ‘কাউকে পেছনে ফেলে নয়’। অর্থাৎ রাষ্ট্রে বসবাসকারী সব মানুষ সমমর্যাদাসম্পন্ন হবে এবং সমান সুযোগ লাভ করবে। কিন্তু বাস্তবে বাংলাদেশে বসবাসরত দলিত জনগোষ্ঠীর প্রায় এক কোটির বেশি মানুষ এখনো নানান বঞ্চনা ও মর্যাদাহীন অবস্থায় জীবন ধারণ করছে। দলিত মানুষকে উন্নয়নবঞ্চিত রেখে সরকার কর্তৃক গৃহীত টেকসই উন্নয়ন যেমন সম্ভব হবে না, তেমনি সরকার কর্তৃক ঘোষিত রূপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ অর্জন করাও চ্যালেঞ্জ হবে।

সংলাপে বাংলাদেশ দলিত পরিষদের সভাপতি উদয় কৃষ্ণ দাস সভাপতিত্ব করেন। দেশের আট বিভাগ থেকে আসা দলিত নেতারা প্রস্তাবিত বৈষম্য বিলোপ আইন পাস ও মানবতার ১০ দফা দাবি তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে ধারণাপত্র পাঠ করেন বাংলাদেশ দলিত পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অশোক দাস। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন পরিত্রাণের নির্বাহী পরিচালক মিলন দাস।

সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সাংসদ সরোয়ার জাহান বাদশা, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, সাহিত্যিক কাজী রোজী, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রর শিল্পী মনোরঞ্জন ঘোষাল, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের পরিচালক রীনা রায়, হেকস ইন্টারন্যাশনালের কান্ট্রি ডিরেক্টর অনিক আসাদ, আর্টিকেল নাইনটিনের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারুক ফয়সাল, ক্রিশ্চিয়ান এইডের হেড অব প্রোগ্রাম ফারহানা আফরোজ, স্বর্ণ কিশোরী নেটওয়ার্ক বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও নির্বাহী প্রধান ফারজানা ব্রাউনিয়া।