স্টামফোর্ড ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় সহপাঠীদের বিক্ষোভ

স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী রুবাইয়াতের মৃত্যুর ঘটনায় সহপাঠীরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ
স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী রুবাইয়াতের মৃত্যুর ঘটনায় সহপাঠীরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের (স্নাতক) শিক্ষার্থী রুবাইয়াত শারমিনকে (২০) তাঁর গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়েছে। গত বুধবার মধ্যরাতে পুলিশ সিদ্ধেশ্বরীর একটি সড়ক থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে। শারমিনের মৃত্যুর ঘটনায় সহপাঠীরা সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।

গত বুধবার মধ্যরাতে পুলিশ ৬৮ সিদ্ধেশ্বরীর সামনের রাস্তা থেকে অজ্ঞাত হিসেবে ওই তরুণীর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায়। বৃহস্পতিবার রাতে স্বজনেরা রমনা থানায় তোলা ছবি দেখে তরুণীর লাশ শনাক্ত করেন। পুলিশ বলছে, তরুণীকে সিদ্ধেশ্বরীর কোনো ভবন থেকে ফেলে হত্যা করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ধারণা করা হচ্ছে, ওই তরুণী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।

আজ শুক্রবার শারমিনের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের সদর উপজেলার বিজয়নগরে তাঁকে দাফন করা হয়। অন্যদিকে রাজধানীতে বেইলি রোডে শারমিনের সহপাঠীরা এ ঘটনায় মানববন্ধন করে। পরে বেইলি রোড থেকে মিছিল নিয়ে সিদ্ধেশ্বরীতে যায়। সহপাঠীরা স্লোগান দিয়ে দোষীদের শাস্তি দাবি করে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে রমনা থানায় হত্যা মামলা করেন। পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদনে বলা হয়, তরুণীর মেরুদণ্ড, বাঁ হাতের কনুই ও ডান পায়ের গোড়ালি ভাঙা। মাথা, নাক, মুখে জখম এবং রক্তাক্ত অবস্থায় ছিল। বুকের ডান দিকে ক্ষত চিহ্ন রয়েছে।

স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী রুবাইয়াতের মৃত্যুর ঘটনায় সহপাঠীরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ
স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী রুবাইয়াতের মৃত্যুর ঘটনায় সহপাঠীরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে বৃহস্পতিবার শারমিনের লাশের ময়নাতদন্ত হয়। কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক সোহেল মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, লাশের শরীরের আঘাত দেখে মনে হয়েছে ওপর থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর আগে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন কি না, তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য আলামত সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে প্রতিবেদন পাওয়া গেলে তাঁর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত করে বলা যাবে।

পারিবারিক সূত্র জানায়, শারমিন সপরিবার ২৫৫ শান্তিবাগে থাকতেন। এক ভাই এক বোনের মধ্যে তিনি বড় ছিলেন। তাঁর বাবা রোকনউদ্দিন হবিগঞ্জের একটি পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ পরিদর্শক। শারমিন দুটি টিউশনি করে বুধবার সন্ধ্যায় বাসায় ফেরেন। পরে তিনি কাজ আছে বলে বাসা থেকে বের হন। বাসা থেকে নিচে নেমে তার ব্যবহৃত মুঠোফোন ও পরা স্যান্ডেল বাসায় পাঠিয়ে দিয়ে এক জোড়া পুরোনো স্যান্ডেল পায়ে দিয়ে তিনি বেরিয়ে যান। কিন্তু রাতে আর বাসায় ফিরে আসেননি। স্বজনেরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও তাঁর সন্ধান পাননি। পরে খবর পেয়ে শারমিনের মাসহ স্বজনেরা রমনা থানায় গিয়ে লাশের ছবি দেখে শারমিনকে শনাক্ত করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রমনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জহিরুল ইসলাম বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কাউকে আটক করা যায়নি। পরিচয় যখন পাওয়া গেছে, শিগগিরই এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্‌ঘাটন করা যাবে বলে মন্তব্য করেন এই কর্মকর্তা।

আরও পড়ুন: