তদবির-বাণিজ্য ও দুর্নীতি রোধে লটারির মাধ্যমে বদলি: ভূমিমন্ত্রী

ভূমি মন্ত্রণালয়ের তৃতীয় থেকে দ্বিতীয় শ্রেণির পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত ৫৪৮ জন গণকর্মচারীর পদোন্নতি–পরবর্তী পদায়ন/বদলি লটারির মাধ্যমে নির্ধারণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। ছবি: পিআইডি
ভূমি মন্ত্রণালয়ের তৃতীয় থেকে দ্বিতীয় শ্রেণির পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত ৫৪৮ জন গণকর্মচারীর পদোন্নতি–পরবর্তী পদায়ন/বদলি লটারির মাধ্যমে নির্ধারণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। ছবি: পিআইডি

তদবির–বাণিজ্য ও এ–সম্পর্কিত দুর্নীতি রোধ করে ভূমি খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে লটারির মাধ্যমে পদায়ন ও বদলি কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। তিনি বলেন, পিএসসির মাধ্যমে নন-ক্যাডার কানুনগো নিয়োগের চিন্তাও করছে সরকার।

আজ বুধবার সচিবালয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে এক অনুষ্ঠানে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এসব কথা বলেন।

মন্ত্রণালয়ের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ব্যবস্থাপনা বিভাগ ও সেটেলমেন্ট বিভাগের সার্ভেয়ার ও সমমানের পদ (তৃতীয় শ্রেণি) থেকে কানুনগো/উপসহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার (দ্বিতীয় শ্রেণি) পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত ৫৪৮ জন গণকর্মচারীর পদোন্নতি–পরবর্তী পদায়ন/বদলি লটারির মাধ্যমে নির্ধারণ করার কার্যক্রম উদ্বোধন করেন ভূমিমন্ত্রী। এ সময় তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি কোনো কোনো জায়গা থেকে অভিযোগ শোনা গেলে আমি এ প্রক্রিয়ায় নতুন পদোন্নতিপ্রাপ্তদের বদলি করতে বলি। আমরা এমন কিছু করতে চাইছি যেন পদায়ন, বদলি ও অন্যান্য দাপ্তরিক কার্যক্রমের প্রক্রিয়ায় প্রশ্নাতীত স্বচ্ছতা থাকে। অনেক সময় এমন জায়গা থেকে তদবির আসে যে আমাদের বিব্রত হতে হয়। সে জন্য আমি সচিবকে এ নির্দেশ প্রদান করি।’

সাইফুজ্জামান চৌধুরী আশা ব্যক্ত করে বলেন, ‘ভবিষ্যতের জন্য একটি পাথেয় সৃষ্টি হচ্ছে আজ। আজ একটা স্ট্যান্ডার্ড সৃষ্টি হলো। আমরা একটি সিস্টেম ডেভেলপ করতে চাইছি। বিভাগীয় অভিযোগে যাঁদের সাজা হয়েছে, তাঁদের পদোন্নতির জন্য বিবেচনা করা হয়নি।’

উপস্থিত সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে ভূমিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা নতুন নিয়োগবিধি তৈরি করছি। এ বিধি অনুসারে মাঠপর্যায়ে বিভিন্ন পদবির প্রায় সাত হাজার নতুন ভূমি কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হবে। এ ছাড়া পিএসসির মাধ্যমে নন-ক্যাডার কানুনগো নিয়োগ করার চিন্তাও করছি।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, কোনো কর্মক্ষেত্রে কোনো সরকারি কর্মচারী পোস্টিং হলে সাধারণত আশা করা হয় তিনি কমপক্ষে তিন বছর সেখানে দায়িত্ব পালন করবেন। সুতরাং, আজকে যাঁরা বদলি হয়েছেন, তাঁদের কর্মজীবনের পরবর্তী বদলি বিধিমোতাবেক হবে।

ভূমিসচিব মো. মাক্‌ছুদুর রহমান পাটওয়ারী বলেন, সবাই নিজ সুবিধা অনুযায়ী বদলি হতে চান। দেখা যায়, একই জায়গার জন্য অনেকে তদবির করেন। আবার বদলির জন্য অবৈধভাবে মোটা অঙ্কের অর্থ লেনদেন করার জন্যও অনেকে উপায় খোঁজেন। সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অনেক সময় বিব্রত বোধ করে।

প্রশ্নোত্তর পর্বের শেষে মন্ত্রী স্বচ্ছ বাক্স থেকে দৈবচয়নের মাধ্যমে, তথা লটারির মাধ্যমে ১০ জন নতুন পদোন্নতিপ্রাপ্ত গণকর্মচারীর কর্মক্ষেত্রের ঠিকানা তুলে এ বদলি কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। এরপর ভূমিসচিব বাকি পদোন্নতিপ্রাপ্ত ব্যক্তির কর্মক্ষেত্রের ঠিকানা স্বচ্ছ বাক্স থেকে লটারির মাধ্যমে তুলে একে একে সবার বদলি ঘোষণা করেন।

অতিরিক্ত সচিব (মাঠ-প্রশাসন) প্রদীপ কুমার দাসসহ ভূমি মন্ত্রণালয় ও ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।