শিবপুরে যুবককে কুপিয়ে হত্যা

মেহেদী হাসান
মেহেদী হাসান

নরসিংদীর শিবপুরে মেহেদী হাসান ওরফে উদয় (২৩) নামের এক তরুণকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে শিবপুর পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের উল্টো পাশের গলিতে তাঁর ওপর ওই হামলা হয়। এই হত্যাকাণ্ডে ১৫ থেকে ২০ যুবক অংশ নিয়েছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

নিহত মেহেদী শিবপুরের ডাকবাংলো এলাকার মোস্তফা ভেন্ডারের ছেলে। তিনি নরসিংদী মডেল কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর রাজধানীর তেজগাঁও পলিটেকনিকে পড়াশোনা করতেন। নিহত মেহেদী ঘটনার সময় ওই স্থানে ব্যাডমিন্টন খেলতে এসেছিলেন। কি কারণে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে তা বলতে পারছেন না স্বজনরা।

নিহত মেহেদীর বন্ধু মোমেন, টুটুল, রাখিল ও নাইম জানান তাঁরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। গত ১৫ দিন ধরে ওই স্থানে তাঁরা সাত-আটজন বন্ধু মিলে ব্যাডমিন্টন খেলে আসছেন। বুধবার সন্ধ্যার আগে মেহেদী সেখানে খেলতে আসেন। এ সময় সেখানে ১৫ থেকে ২০ জন যুবক হাতে দা, ছুরি, চাপাতি ও পিস্তল নিয়ে দৌড়ে এসে মেহেদীকে আক্রমণ করেন। ওই সময় মেহেদী দৌড় দিলে তাঁরাও পেছনে ছুটে তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে পালিয়ে যান। পরে ওই চার তরুণ তাঁকে শিবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নরসিংদী জেলা হাসপাতালে পাঠায়। তাঁদের ভাষ্য, জেলা হাসপাতালে নেওয়ার পথে পুরানন্দিয়া নামক স্থানে মেহেদীর মৃত্যু হয়।

হত্যাকাণ্ডের খবর শুনে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন মেহেদীর মা বিউটি বেগম ও ছোট বোন তাছলিমা আক্তার। রাত সাড়ে আটটা, নরসিংদী জেলা হাসপাতাল, ১১ ডিসেম্বর। ছবি: প্রথম আলো
হত্যাকাণ্ডের খবর শুনে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন মেহেদীর মা বিউটি বেগম ও ছোট বোন তাছলিমা আক্তার। রাত সাড়ে আটটা, নরসিংদী জেলা হাসপাতাল, ১১ ডিসেম্বর। ছবি: প্রথম আলো

ওই চার তরুণের ভাষ্য, পেছন দিক থেকে দৌড়ে মেহেদীকে ধরে ফেলার পর সজীব নামের একজন রড দিয়ে মাথায় আঘাত করেন। মাটিতে লুটিয়ে পড়লে অন্যরা মেহেদীকে রড ও বেল্ট দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে। ওই সময় হৃদয় ও শিহাব নামের দুজন মিলে তার শরীরের বিভিন্ন অংশে ছুরিকাঘাত করে। পরে রাব্বি নামের একজন শরীরে রডের আঘাত করলে সে নিস্তেজ হয়ে যায়। হামলাকারীদের মধ্যে অনেকে মুখোশ পড়া ছিল। হামলাকারীদের মধ্যে গালিব, রিফাত ও সিফাত নামের আরও তিনজনকে চিনতে পেরেছেন বলে তাঁদের দাবি। তাঁরা সবাই শিবপুরের ভূঁইয়া মার্কেট এলাকার বখাটে বলেও দাবি করেন তাঁরা।

নরসিংদী জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক রিপা পাল বলেন, ‘আমরা তাঁকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। তাঁর পিঠ ও কোমরের ওপরের দিকে এবং নাভির কাছাকাছি বেশ কিছু আঘাতের চিহ্ন পেয়েছি।’

শিবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা আজিজুর রহমান বলেন, হামলাকারীদের কয়েকজন নিহত মেহেদীর ছোটবেলার বন্ধু ছিলেন। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।