মতিঝিলে ভুয়া ডিবি পুলিশের পরিচয়ে ২৭ লাখ টাকা ছিনতাই, ধরা পড়েননি কেউ

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভুয়া পরিচয় দিয়ে সোনার দোকানের কর্মচারীর কাছ থেকে ২৭ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার বিকেলে রাজধানীর মতিঝিল এলাকায় প্রকাশ্যে এই ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় রোববার সোনার দোকানের কর্মচারী সুমন চৌধুরী বাদী হয়ে মোটরসাইকেলের অজ্ঞাত চারজন আরোহীকে আসামি করে মতিঝিল থানায় মামলা করেছেন। মামলার ২৪ ঘণ্টা পার হলেও এখনো ওই চক্রের কেউ ধরা পড়েননি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও মতিঝিল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সফিকুল ইসলাম আকন্দ প্রথম আলোকে বলেন, ভুয়া ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে যাঁরা ২৭ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়েছেন, তাঁদের গ্রেপ্তার করার সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে। ঘটনার রহস্য উদঘাটনের জন্য ঘটনাস্থলের আশপাশের ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। থানা-পুলিশের পাশাপাশি ডিবি পুলিশ বাহিনীর সদস্যরাও ছায়া তদন্ত করছেন।

মামলার এজাহারে সুমন চৌধুরী বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সোনার দোকানটির নাম মহারানী জুয়েলার্স। ওই কোম্পানির বিক্রেতা হিসেবে কাজ করে আসছেন ভুক্তভোগী সুমন। ১৪ ডিসেম্বর তাঁদের প্রতিষ্ঠানের পুরোনো ৬০ ভরি সোনা নিয়ে পুরান ঢাকার তাঁতীবাজারে আসেন। সেখানে ওই সোনা বিক্রি করেন মোট ২৭ লাখ ২২ হাজার টাকায়। এরপর দুই ভরি সোনা আর ওই টাকা একটি লাল কাপড়ের ব্যাগে ঢোকান তিনি। পরে ট্রেনে করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যাওয়ার জন্য তাঁতীবাজার থেকে প্রথমে দিশারি পরিবহনে করে গুলিস্তান আসেন। এরপর বিআরটিসির বাসে করে রোববার বিকেল সাড়ে চারটার সময় মতিঝিলের কমলাপুর ট্রাফিক সিগন্যাল এলাকায় পৌঁছান।

এজাহারে আরও বলা হয়, কর্মচারী সুমন চৌধুরী মতিঝিলের কমলাপুরের ৬ নম্বর বাস কাউন্টারের সামনে আসেন ৪টা ৪০ মিনিটে। তখন দুটি মোটরসাইকেলে করে চারজন লোক তাঁর কাছে আসেন। প্রত্যেকে নিজেদের ডিবি পুলিশের সদস্য বলে পরিচয় দেন। চারজনই সুমনকে উদ্দেশ করে বলেন, সুমনের কাছে অবৈধ মালামাল আছে। মোটরসাইকেলে উঠতে বললে সুমন ভয়ে তাঁদের মোটরসাইকেলে ওঠার চেষ্টা করেন। এ সময় ওই ব্যক্তিরা সুমনের ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে মতিঝিলের পীরজঙ্গি মাজারের দিকে দ্রুত চলে যান। তখন সুমন চৌধুরী মোটরসাইকেলের পেছনে পেছনে দৌড়ালেও শেষ পর্যন্ত কাউকে ধরতে পারেননি। যাঁরা ভুয়া ডিবির পরিচয় দিয়ে ছিনতাই করেছেন তাঁদের বয়স হবে ৩৫ থেকে ৪২ বছরের মধ্যে।

মামলার বাদী ও ভুক্তভোগী সুমন চৌধুরী টেলিফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভুয়া ডিবি পুলিশের পরিচয়ে আমার দোকানের সোনা বিক্রির ২৭ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে ছিনতাইকারীরা। আমি মামলা করেছি কিন্তু কেউ এখনো ধরা পড়েনি।’

মতিঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইয়াসির আরাফাত খান প্রথম আলোকে বলেন, ভুয়া ডিবি পুলিশের পরিচয়ে ২৭ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামলা হয়েছে। এর সঙ্গে জড়িতদের ধরার চেষ্টা চলছে।

তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সফিকুল প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভুয়া ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে এর আগেও মতিঝিল এলাকায় ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। ২৭ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িতদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।’