লাশটি ছিল জলাশয়ে ফ্রিজের ভেতর

ছবিটি প্রতীকী
ছবিটি প্রতীকী

গত রোববার সকালে বাসা থেকে ব্যাংকের উদ্দেশে বের হয়েছিলেন স্বামী। দুপুর দুইটা পর্যন্তও স্ত্রীর সঙ্গে কথা হয় তার। এরপর বিকেল গড়িয়ে রাত হয়, কিন্তু তারপরও স্বামী ঘরে ফিরছিলেন না। এদিক সেদিক বহু খোঁজাখুঁজির পর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন স্ত্রী। আজ বুধবার মিলে স্বামীর লাশ। লাশটি জলাশয়ে একটি ফ্রিজের ভেতর হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ছিল।

নিহত ব্যক্তির নাম রবিন আহমেদ (৪০)। তিনি সৌদিপ্রবাসী। গত ১৮ নভেম্বর বাংলাদেশে আসেন ৬ মাসের ছুটিতে। স্ত্রী নাসরিন আক্তার ও দুই সন্তান নিয়ে ভাড়া থাকতেন টঙ্গীর এরশাদ নগরের চাংকির পাড় এলাকায়। তবে গাজীপুরের কালিয়াকৈর থেকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

স্বামীর মৃত্যুর খবর শোনার পর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন স্ত্রী নাসরিন আক্তার। কথা বলার অবস্থা নেই। জানতে চাইলে তাঁর এক স্বজন জানান, গত রোববার সকালে টঙ্গী বাজারে একটি ব্যাংকে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হন রবিন। এরপর দুপুর দুইটা পর্যন্ত তাঁর মুঠোফোন খোলা ছিল। এরপর হঠাৎ তাঁর মুঠোফোন বন্ধ হয়ে যায়। স্ত্রী নাসরিন আক্তার একাধিকবার চেষ্টা করেও সংযোগ পাচ্ছিলেন না। এদিক-সেদিক, আত্মীয়স্বজনদের কাছেও খোঁজ না পেয়ে ওই দিন রাতে টঙ্গী পূর্ব থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। আজ পুলিশের মাধ্যমে খবর পান কালিয়াকৈরে তাঁর স্বামীর লাশ পাওয়া গেছে। এরপর থেকেই নাসরিন আক্তার অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে রয়েছেন।

টঙ্গী পূর্ব থানা-পুলিশ জানায়, জিডি করার পরপরই পুলিশ রবিনকে খুঁজতে থাকে। এর মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার সকালে তাঁর স্ত্রী এসে জানান রবিনের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ৬ থেকে ৭ লাখ টাকা তোলা হয়েছে। এই কথার সূত্র ধরে রাজধানীর উত্তরখান, গাজীপুরের বোর্ডবাজার ও গাজীপুরের তিনটি এটিএম বুথ থেকে টাকা তোলার প্রমাণ পায় তারা। এরপর বুথগুলোর থেকে সিটি টিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে ওই দিন রাত ১২টার টঙ্গী এলাকা থেকে সোহেল ও কায়সার নামের দুজনকে আটক করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্য মতে আজ সকালে কালিয়াকৈরের ডেনুপুর গ্রামের একটি জলাশয় থেকে রবিনের লাশ উদ্ধার করা হয়।

টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন বলেন, ধারণা করা হচ্ছে বুথগুলো থেকে টাকা তোলার পর তাঁকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। আমরা তাঁকে জলাশয়ে একটি ফ্রিজের ভেতর হাত-পা বাঁধা অবস্থায় পাই। তিনি বলেন, আটককৃত দুজনের মধ্যে সোহেলের বাড়ি কালিয়াকৈর ও কায়সারের বাড়ি টঙ্গীতে। এর সঙ্গে আরও কেউ জড়িত কি না, তা তদন্ত চলছে।