আ.লীগ সবচেয়ে বড় ও শক্তিশালী সংগঠন: শেখ হাসিনা

আওয়ামী লীগের সম্মেলনে বক্তৃতা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, ঢাকা, ২০ ডিসেম্বর। ছবি: ফোকাস বাংলা
আওয়ামী লীগের সম্মেলনে বক্তৃতা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, ঢাকা, ২০ ডিসেম্বর। ছবি: ফোকাস বাংলা

আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ও শক্তিশালী সংগঠন। বারবার আঘাত এলেও এই সংগঠনকে কেউ ধ্বংস করতে পারেনি। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের পথেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

আজ শুক্রবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা ও তার পরবর্তী ঘটনার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতাকে হত্যা করার পর মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করা হয়েছে, স্বাধীনতাবিরোধীদের ক্ষমতায় আনা হয়েছে, রাজনীতির সুযোগ দেওয়া হয়েছে, মন্ত্রী করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু পরিবারের হত্যাকারীদের বিচারের পথ বন্ধ করা হয়েছে। ১৯৮১ সালে তাঁকে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয় জানিয়ে তিনি ছোট থেকে নিজের রাজনৈতিক জীবনের স্মৃতি তুলে ধরেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘চেষ্টা করেছি আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করার। তারপরেও আঘাত এসেছে। ভাঙন এসেছে, ধীরে ধীরে সংগঠনকে গড়ে তুলেছি। আজকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে সব থেকে বড় সংগঠন এবং সব থেকে শক্তিশালী সংগঠন।’

আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে শোভা পাচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যানার-পোস্টার। ঢাকা, ২০ ডিসেম্বর। ছবি: দীপু মালাকার
আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে শোভা পাচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যানার-পোস্টার। ঢাকা, ২০ ডিসেম্বর। ছবি: দীপু মালাকার

বাংলাদেশ ও আওয়ামী লীগের ওপর বারবার আঘাত এসেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সংগঠনকে শেষ করে দেওয়ার অনেক প্রচেষ্টা অনেকেই করেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ জাতির পিতার হাতে গড়া আদর্শের সংগঠনকে কেউ নিঃশেষ করতে পারেনি। সংগঠনের সাময়িক ক্ষতিসাধিত হয়েছে কিন্তু আওয়ামী লীগ সংগঠনকে একেবারে ধ্বংস করে দিতে পারেনি।’

শেখ হাসিনা বলেন, এত অল্প সময়ে কোনো দেশ যুদ্ধের ভয়াবহতা কাটিয়ে এগিয়ে যেতে পারে, যা একমাত্র বাংলাদেশেই জাতির পিতা তাঁর নেতৃত্বে সেই দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন।

বিএনপির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা দেশের জন্য কোনো কল্যাণ করতে পারে না। দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মানি লন্ডারিং, অস্ত্র চোরাকারবারি, গ্রেনেড হামলা, আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের ওপর অত্যাচার করেছে তারা। তিনি আরও বলেন, এক দশক আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়। এই সময়ে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। মাথাপিছু আয় বেড়েছে, দারিদ্র্যের হার কমেছে। জাতির পিতা স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে রেখে গিয়েছেন, তা এখন উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উপনীত হয়েছে।

উন্নয়নের ধারা ধরে রাখতে হবে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী বলেন, ‘আরও অনেক দূর এগিয়ে যেতে হবে। জাতির পিতার লক্ষ্য ছিল ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশ হিসেবে গড়ে তোলা, সেই লক্ষ্য নিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।’ তাঁর সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু একটা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দেশটাকে গড়ে তুলেছেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন উক্তি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, রাজনৈতিক নেতার জন্য নীতি আদর্শ সবচেয়ে বড়। যিনি প্রস্তুত থাকতে পারেন, ত্যাগ স্বীকার করতে পারেন, তিনি সফল হতে পারেন। আর আওয়ামী লীগ সেই সংগঠন, যার নেতা–কর্মীরা আত্মত্যাগ করেছেন এবং তারই ফসল বাংলাদেশের জনগণ আজ পেয়েছে। বাংলাদেশ আজকে এগিয়ে যাচ্ছে উন্নত সমৃদ্ধির পথে। যে বাংলাদেশের স্বপ্ন জাতির পিতা দেখেছেন, সেটাই আওয়ামী লীগের লক্ষ্য। আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, তাঁদেরও এই চিন্তাচেতনা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যের শুরুতে জাতির পিতা, জাতীয় চার নেতা, মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীসহ শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এ ছাড়া বক্তব্য শেষে আজকের মতো সম্মেলন মুলতবি ঘোষণা করেন। আগামীকাল শনিবার সকাল ১০টায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে।