মালি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে

জয়নুল আবেদিন
জয়নুল আবেদিন

প্রাথমিকের গণ্ডি পেরিয়ে কাজ শুরু করেন ফলের বাগানে। এরপর কাজ করেছেন বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসের ক্যানটিনবয় হিসেবে। পাশাপাশি চালিয়ে গেছেন নিজের পড়াশোনা। এবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগে ভর্তি হয়েছেন জয়নুল আবেদিন। কিন্তু থেমে গেছেন ঢাকায় থেকে পড়ার খরচ চালানোর ভাবনায়।

জয়নুলের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার বোয়ালিয়া বাবুপুর গ্রামে। তাঁর বাবা দুরুল হোদা দিনমজুর। জয়নুল জানান, প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার পরই পড়ার খরচ চালাতে পারেনি পরিবার। তাই মালি হিসেবে কাজ শুরু করেন একটি বরই ও টমেটোর বাগানে। বাগান থেকে ফল সংগ্রহ, প্যাকেট করার দায়িত্ব ছিল তাঁর। এর মধ্যেই সমাপনী পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়। তাতে জিপিএ-৫ পান জয়নুল।

জয়নুল বলেন, ‘পরীক্ষায় ভালো ফলের কথা শুনে বাগানমালিক ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি করে দেন। এরপর বাগানমালিকের সহযোগিতায় চলে পড়াশোনা। কিন্তু কিছুদিন পর ব্যবসায় মন্দা দেখা দিলে মালিক সহায়তা করতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন। এরপর জয়নুলকে রহনপুর এ বি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে কাজ করার সুযোগ করে দেন এক শিক্ষক। ছাত্রাবাসে থেকে খাওয়ার বিনিময়ে বাজার করা, ছাত্রদের খাবার পরিবেশনের কাজ করতাম। কাজ শেষে চলত নিজের পড়াশোনা।’

জেএসসি পরীক্ষার আগে বিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রধান শিক্ষক কবিতা চন্দ জয়নুলের খাবারের ব্যবস্থা করেন। এরপর থেকে আর কাজ করতে হয়নি জয়নুলকে। এসএসসি পরীক্ষাতেও জিপিএ-৫ পান জয়নুল। কবিতা চন্দের সহায়তায় রাজশাহী সরকারি কলেজে ভর্তি হন। গত বছর এইচএসসি পরীক্ষাতেও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে পেয়েছেন জিপিএ-৫ ও মেধাবৃত্তি। ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে সুযোগ পান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে।

জয়নুল বলেন, বর্তমানে প্রধান শিক্ষক কবিতা চন্দ অবসর নিয়েছেন। তাঁর ব্যবসায়ী স্বামীও মারা গেছেন। এতে তিনিও আর সহায়তা করার অবস্থায় নেই।