সেতু থেকে ঠেলে তুলতে হয় গাড়ি

সংযোগ সড়ক থেকে দেবে গেছে সেতু। ঝুঁকি নিয়ে চলছে গাড়ি। গত সোমবার দুপুরে রাউজানের ছোবহান দফাদার হাটে।  প্রথম আলো
সংযোগ সড়ক থেকে দেবে গেছে সেতু। ঝুঁকি নিয়ে চলছে গাড়ি। গত সোমবার দুপুরে রাউজানের ছোবহান দফাদার হাটে। প্রথম আলো

বন্যার পানির তোড়ে সেতুটি দেবে গেছে সড়ক থেকে।  সরে গেছে সংযোগ সড়কের গোড়ার মাটিও। এখন গাড়ি উঠলেই কাঁপে সেতু। এ জন্য যাত্রী নামিয়ে ঠেলে সেতু থেকে সড়কে তুলতে হয় গাড়ি।

এই চিত্র চট্টগ্রামের রাউজানের নোয়াপাড়া ইউনিয়নের মুহাম্মদ শাহ (রহ.) সড়কের সামমাহালদারপাড়া ছোবহান দফাদার হাট সেতুর। ২০১৭ সালের জুন মাসে বন্যার পানির তোড়ে সেতুটি দেবে যায়। এরপর থেকে ভোগান্তির শুরু। ৯ গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষের চলাচল এই সেতু দিয়ে।

গত সোমবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কটির দুই পাশে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছে ১০ থেকে ১২ অটোরিকশা ও ব্যক্তিগত গাড়ি (কার)। সবগুলো থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়া হয়। হেঁটেই সেতু পার হচ্ছেন যাত্রীরা। আর স্থানীয় মানুষজনের সহযোগিতায় ঠেলে ঠেলে গাড়িগুলো সেতু থেকে ওঠানো হচ্ছে সড়কে। সেতু থেকে সড়কটি কয়েক ফুট দেবে গেছে।

ব্যক্তিগত একটি গাড়ির চালক রহিম উল্লাহ বলেন, ‘আধা ঘণ্টা চেষ্টা করে সেতু পার হয়েছি। স্থানীয় মানুষের সহযোগিতা না পেলে গাড়ি নিয়ে সড়কে উঠতে পারতাম না।’

অটোরিকশাচালক আবু জাহেদ বলেন, ‘ভাঙা সেতুর কারণে এই সড়ক দিয়ে গাড়ি চালাতে ইচ্ছে করে না। তবুও যাত্রীদের সুবিধার্থে গাড়ি চালাই।’

অটোরিকশার যাত্রী নাসিমা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাচ্চাকে স্কুল থেকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলাম। গত আড়াই বছর ধরে প্রতিদিন এই ভোগান্তি আমাদের পোহাতে হচ্ছে। এই সেতুর গোড়ায় এলে গাড়ি থেকে নেমে সেতু পার হতে হয়।’

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ওই ইউনিয়নের কচুখাইন, উত্তর কচুখাইন, পশ্চিম কচুখাইন, দক্ষিণ নোয়াপাড়া, খন্দকারপাড়া, ছামিদর কোয়াং, সামমাহালদারপাড়া, মোকামীপাড়া ও সাদারপাড়ার মানুষ উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে। এ ছাড়া প্রতিদিন স্কুল-কলেজে যাতায়াত করে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী।

নোয়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান দিদারুল আলম বলেন, সেতুটি কয়েক দফায় উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের লোকজন পরিদর্শন করেছেন। কিন্তু এখনো কাজের কোনো অগ্রগতি হচ্ছে না। এ কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা দুর্ভোগে আছে।

স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সেতুটি নতুনভাবে তৈরি করতে প্রক্রিয়া শুরু করেছে তারা। সেতুটির নকশা করে পাঠানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে। বরাদ্দ হলে দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে নতুন সেতু তৈরির কাজ শুরু হবে।

স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের রাউজান উপজেলা প্রকৌশলী আবুল কালাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আশা করছি শিগগির এ সেতু নির্মাণে প্রকল্প বরাদ্দ পাওয়া যাবে।’