রাজশাহী কলেজ: স্মৃতিতে উঠে এল তারুণ্যের ৭৪

পুরোনো স্মৃতি হাতড়ানোর পাশাপাশি চলে নতুন স্মৃতিকে ফ্রেমবন্দী করা। গতকাল রাজশাহী কলেজের পুনর্মিলনীতে।  ছবি: প্রথম আলো
পুরোনো স্মৃতি হাতড়ানোর পাশাপাশি চলে নতুন স্মৃতিকে ফ্রেমবন্দী করা। গতকাল রাজশাহী কলেজের পুনর্মিলনীতে। ছবি: প্রথম আলো

পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে চলছে রাজশাহী কলেজের ১৯৭৪ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের স্মৃতিচারণার পর্ব। এর মধ্যেই মঞ্চে উঠে একজন ঘোষণা দিলেন, ‘অনুষ্ঠানে একটি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। কোনো অবস্থাতেই ভুলে যাবেন না, আজ সারা দিন আপনাদের বয়স ১৭ থেকে ১৮–তে নির্দিষ্ট করা হয়েছে। বয়স বদলের সঙ্গে সঙ্গে আচরণগত পরিবর্তনও বাঞ্ছনীয়। কোনো অবস্থাতেই মলিন দৃষ্টি, দুশ্চিন্তার অতলে ডুব দেওয়া যাবে না। শারীরিক অসুস্থতার কথা বলা একেবারেই নিষিদ্ধ। উল্লিখিত কাজগুলো করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে গণ্য হবে—আদেশক্রমে কর্তৃপক্ষ।’

ঘোষণা শোনার সঙ্গে সঙ্গে মাঠভর্তি কয়েক হাজার দর্শকএকসঙ্গে হেসে উঠলেন। গতকাল শুক্রবার রাজশাহী কলেজের ‘এইচএসসি পুনর্মিলনী-২০১৯’–এর প্রথম দিনের অনুষ্ঠানের একাংশ ছিল এ রকমই হাসি-আনন্দ আর স্মৃতিকাতরতায় ভরা। স্মৃতি উঠে আসছিল ১৯৭৪ সাল থেকেও।

এক শিক্ষার্থী স্মৃতিচারণায় বললেন, ‘তখন আমরা সব কথাতেই হাসতাম। এবার সঠিকভাবে জাপান উচ্চারণ করতে না পারায় এক শিক্ষক আমাদের জানালা দিয়ে বাইরে ছুড়ে ফেলে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শিক্ষকের ওই ঘোষণাতে কোনো কাজ হয়নি। কারণ, তখন আমরা স্যারের সব কথাতেই শুধু হাসতাম।’

রাজশাহী কলেজের বিশাল মাঠের দক্ষিণ পাশে ঠিক প্রশাসন ভবনের আদলে মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। এই কলেজের ছাত্র কবি রজনীকান্ত সেনের নামে মঞ্চের নাম দেওয়া হয়েছে ‘রজনীকান্ত মঞ্চ’। মঞ্চের সামনে প্রায় ৯ হাজার শিক্ষার্থীর আসন পাতা। বয়সকে পেছনে ফেলে কে কার সঙ্গে কী কথায় হেসে গড়িয়ে পড়ছেন, কাছে গিয়ে কান না পাতলে তা বোঝার উপায় ছিল না। গণিত বিভাগের এক শিক্ষার্থী তাঁর শিক্ষক ইয়াকুব আলীর কাছে গিয়ে তাঁকে ‘বড় ভাই’ বলে ডেকে উঠলেন। শিক্ষকের চোখ তো ছানাবড়া! এমন সময় শিক্ষার্থী বললে উঠলেন, ‘স্যার, আপনি বলেছিলেন যে পুনর্মিলনীর দিন আমাকে বড় ভাই বললেও আপত্তি করব না।’ কথা শুনে এবার শিক্ষকও হেসে গড়িয়ে পড়েন।

সকালে বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। এতে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ, রাজশাহী-৩ আসনের সাংসদ আয়েন উদ্দিন, নাটোর-৪ আসনের সাংসদ আবদুল কুদ্দুস, রাজশাহীর সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ আদিবা আনজুম ও কলেজের অধ্যক্ষ হবিবুর রহমান।

রাতে আয়োজন মাতান নগর বাউলের জেমস। অনুষ্ঠান শেষ হবে আজ শনিবার।