৩ কিমি ধাওয়া করে ভারতীয়সহ দুজনকে আটক, ইয়াবা উদ্ধার

ইয়াবা বড়ি। ফাইল ছবি
ইয়াবা বড়ি। ফাইল ছবি

সিলেটের বিয়ানীবাজার সীমান্ত এলাকায় প্রায় তিন কিলোমিটার ধাওয়া করে এক ভারতীয় নাগরিকসহ দুজনকে আটক করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)–৯। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ৬ হাজার ৭০০টি ইয়াবা বড়ি উদ্ধার করা হয়।

গতকাল রোববার সন্ধ্যায় উপজেলার মুড়িয়া হাওর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আটক দুজনের একজন হলেন ভারতের আসাম রাজ্যের করিমগঞ্জ জেলাধীন গোবিন্দগঞ্জ গ্রামের বিনন্দ নমশূদ্র (৫৯)। আরেকজন বিয়ানীবাজারের সুপাতলা গ্রামের সুবাস দাশ (৪৯)। সুবাস একটি জুয়েলার্সের মালিক এবং বিয়ানীবাজার স্বর্ণ ব্যবসায়ী সমিতির আহ্বায়ক বলে জানা গেছে।

ভারত-বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী সিলেটের বিয়ানীবাজার। এ উপজেলার মুড়িয়া হাওরের পাশেই ভারতের সীমান্ত এলাকা। হাওর এলাকায় যাতায়াতের ব্যবস্থা, ভৌগোলিক অবস্থান ও প্রতিকূল পরিবেশের কারণে মানুষের যাতায়াত কম। এমন সুযোগে মাদক ব্যবসায়ীরা এ পথেই ভারত থেকে মাদকের চোরাচালান করত। শীতের সময় এ পথে বেড়ে যায় চোরাচালানের পরিমাণ।

গতকাল র‌্যাব-৯-এর কাছে গোপন খবর ছিল, এ পথ দিয়ে মাদকের চোরাচালান হবে। এমন খবরে বিকেল থেকেই ওত পেতে ছিল র‌্যাবের একটি দল। র‌্যাব-৯-এর ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর শওকতুল মোনায়েমের নেতৃত্বে এই দলে ছিলেন সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আনোয়ার হোসেন শামীম। সন্ধ্যায় দুই ব্যক্তি এ পথ দিয়ে ইয়াবার একটি বড় চালান নিয়ে আসছিলেন। তবে র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে তাঁরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় র‌্যাবের সদস্যরা প্রায় তিন কিলোমিটার পথ ধাওয়া দিয়ে ৬ হাজার ৭০০টি ইয়াবা বড়িসহ দুজনকে আটক করেন।

র‌্যাব সূত্রে জানা গেছে, হাওরের পানি শুকিয়ে তৈরি মাটির ফাটল ও কাদাপানির পিচ্ছিল পথে নতুন কারও পক্ষে হেঁটে চলা প্রায় অসম্ভব। হাওরের এ পথ দিয়ে দৌড়ানো দূরের কথা, নিরাপদে হেঁটে চলা ছিল সাধারণ মানুষের জন্য দুষ্কর। তবে চোরাচালানিরা নিজেদের তৈরি পথ দিয়ে অনায়াসে হেঁটে যেতে পারত। এ কারণেই মাদকের চোরাকারবারিরা এ পথকেই বেছে নিয়েছিল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ধাওয়া দিলে চোরাকারবারিরা হাওরের পথ দিয়ে কৌশলে পালিয়ে যেত।

এএসপি আনোয়ার হোসেন শামীম প্রথম আলোকে বলেন, মুড়িয়া হাওরকে মাদকমুক্ত করার পরিকল্পনা দীর্ঘদিন ধরেই ছিল। গতকাল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ইয়াবাসহ আসামিদের আটক করা হয়। তিনি জানান, আটক দুজনের বিরুদ্ধে র‌্যাব বাদী হয়ে বিয়ানীবাজার থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন এবং ভারতীয় নাগরিক বিনন্দ নমশূদ্রের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের মামলা করা হয়েছে। পরে তাঁদের বিয়ানীবাজার থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

এদিকে গতকাল রাতে সিলেটের জকিগঞ্জের শীতলজোড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৭০৫টি ইয়াবা বড়িসহ ময়নুল হক (২২) নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে র‌্যাবের অন্য একটি দল। ময়নুল জকিগঞ্জের ফুলহাট গ্রামের বাসিন্দা। এ ঘটনায় জকিগঞ্জ থানায় পৃথক মামলা করে ময়নুলকে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়েছে।