এলডিপির বিদ্রোহীদের নতুন কমিটি, চাপে পড়তে পারেন অলি

রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এলডিপির আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। ছবি: প্রথম আলো
রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এলডিপির আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। ছবি: প্রথম আলো

অলি আহমদের নেতৃত্ব থেকে আলাদা হওয়ার ৩৩ দিনের মাথায় কেন্দ্রীয় সম্মেলন করেছে আবদুল করিম আব্বাসী ও শাহাদাত হোসেনের লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি—এলডিপি। রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আজ শনিবার এই সম্মেলনে করিম আব্বাসীকে সভাপতি ও শাহাদাত হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়।

সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন সম্মেলনে বলেন, শিগগিরই এলডিপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হবে। আংশিক কমিটিতে জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি পদে সাবেক সাংসদ আবদুল গণি ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে এম এ বাশারের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। করিম আব্বাসী ও শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বে এলডিপির জ্যেষ্ঠ নেতারা গত ২ ডিসেম্বর অলি আহমদের নেতৃত্ব ত্যাগ করে একটি সমন্বয় কমিটি গঠন করেন।

ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ৩৩ জেলা থেকে আসা হাজারো নেতা-কর্মীর উপস্থিতিতে এলডিপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বিদ্রোহী অংশের এই সম্মেলন অলি আহমদকে রাজনৈতিকভাবে আরও চাপে ফেলতে পারে। সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ। অন্য দিকে অলি আহমদের এলডিপির কর্মসূচিগুলোকে বিএনপির নেতারা এড়িয়ে চলছেন। গত ১৭ ডিসেম্বর অলি আহমদের এলডিপির আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে আমন্ত্রণ জানানো হয়। কিন্তু তিনি যাননি।

জানা গেছে, বিভক্ত এলডিপির দুই অংশকে নিয়ে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব দোটানায় পড়েছে। এলডিপির একাংশের সভাপতি অলি আহমদ ও মহাসচিব রেদোয়ান আহমদের ওপর বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব আস্থাশীল নয়। অলি আহমদের নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় মুক্তি মঞ্চের তৎপরতা নিয়েও বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা অসন্তুষ্ট।

‘পিজি হাসপাতালকে ক্যাম্প বানিয়ে খালেদা জিয়াকে হত্যার চেষ্টা হচ্ছে’

সম্মেলনে উপস্থিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ অভিযোগ করে বলেন, সরকার খালেদা জিয়াকে ভয় পেয়ে জেলখানা থেকে তাঁকে লাশ ছাড়া বের করতে চায় না। পিজি হাসপাতালকে ক্যাম্প বানিয়ে খালেদা জিয়াকে হত্যা করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

ইকবাল হাসান মাহমুদ দশ লাখ রোহিঙ্গা সংকটের মধ্যে ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের পরিণতি নিয়ে সোচ্চার না হওয়ায় সরকারের কড়া সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, যতক্ষণ নরেন্দ্র মোদিকে শাড়ি-মিষ্টি-ধুতি পাঠানো যাবে, তত দিন ক্ষমতায় থাকা যাবে। মমতা ব্যানার্জি ভারতে থেকে এই আইনের প্রতিবাদ করে রাস্তায় নেমেছেন। আওয়ামী লীগের নেতা-মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী কী করছেন? কথা বলার সাহস নেই। কারণ ক্ষমতায় তো টিকে আছেন ভারতের দাসত্ব করে।

এলডিপির সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন, দলের কেন্দ্রীয় নেতা আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, জাগপার (একাংশ) সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, এলডিপির নেতা আবদুল গনি, এম এ বাশার, ইব্রাহিম রওনক, কাজী মতিউর রহমান প্রমুখ।