বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর ক্ষণগণনা: নিবন্ধন শুরু সোমবার

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী প্রেস ব্রিফিংয়ে বক্তব্য দেন। ঢাকা, ০৫ জানুয়ারি। ছবি: পিআইডি
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী প্রেস ব্রিফিংয়ে বক্তব্য দেন। ঢাকা, ০৫ জানুয়ারি। ছবি: পিআইডি

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর ক্ষণগণনা কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আগামী শুক্রবার। রাজধানীর তেজগাঁওয়ে পুরাতন বিমানবন্দরে ঐতিহাসিক এই আয়োজন শুরু হবে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদ্‌যাপনের ক্ষণগণনা অনুষ্ঠানে সর্বসাধারণের উপস্থিতির জন্য আগামীকাল সোমবার বেলা তিনটায় অনলাইনে নিবন্ধন শুরু হচ্ছে, যা চলবে পরের দিন মঙ্গলবার রাত ১২টা পর্যন্ত।

আজ রোববার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্‌যাপন জাতীয় কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী এ তথ্য জানান।

প্রধান সমন্বয়ক জানান, ১৭ মার্চ ২০২০ থেকে ২০২১ সালের ১৭ মার্চ পর্যন্ত এই সময়কালটা মুজিব বর্ষ। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদ্‌যাপন শুরু হবে আগামী ১৭ মার্চ।

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর ক্ষণগণনার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করতে গিয়ে কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, ‘১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি অসাধারণ সময়। সেদিন পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে প্রিয় স্বাধীন দেশে বঙ্গবন্ধু ফিরে এসেছিলেন। সারা বাংলাদেশ যেন হুমড়ি খেয়ে পড়েছিল তেজগাঁও বিমানবন্দর ও রেসকোর্স ময়দানে। বঙ্গবন্ধুর ফিরে আসার দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য ক্ষণগণনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিমানবন্দরে জাতির জনককে নিয়ে বিমানটি অবতরণ করেছিল। সেদিন সেখানে একটি উৎসবমুখর পরিবেশে বঙ্গবন্ধুকে বরণ করা হয়েছিল। পরে তাঁকে সেখান থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নিয়ে আসা হয়েছিল। ক্ষণগণনা অনুষ্ঠানে আমরা একটি প্রতীকী আবহ তৈরি করতে চাই।’

ক্ষণগণনার অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, আগামী শুক্রবার বিকেলে ওই অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের প্রতীকী বিমান অবতরণ, বিমান থেকে আলোক প্রক্ষেপণ ও তোপধ্বনি, প্রতীকী গার্ড অব অনার এবং সবশেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তৃতার পর মুজিব বর্ষের ক্ষণগণনার উদ্বোধন ও লোগো উন্মোচন করা হবে।

সারা দেশে কীভাবে একসঙ্গে ক্ষণগণনার অনুষ্ঠান হবে, জানতে চাইলে কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, সারা দেশে ক্ষণগণনার যন্ত্র স্থাপনের কাজ চলছে। যেমন ঢাকায় তিনটি ক্ষণগণনার যন্ত্র বসছে জাতীয় সংসদের সামনে, হাতিরঝিলে ও উত্তরায়। সিটি করপোরেশনভুক্ত এলাকাগুলোতে ক্ষণগণনার যন্ত্র বসছে। এ ছাড়া ৫৩টি জেলাসহ টুঙ্গিপাড়া ও মুজিবনগরেও একই সঙ্গে ক্ষণগণনা শুরু হবে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মুজিব বর্ষের ক্ষণগণনা কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ১০ থেকে ১২ হাজার মানুষকে যুক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তবে অনুষ্ঠানে আসনসংখ্যা খালি থাকা সাপেক্ষে সফলভাবে অনলাইনে নিবন্ধিত ব্যক্তিরা অনুষ্ঠানে প্রবেশের সুযোগ পাবেন। এ জন্য www.event.mujib100.gov.bd ওয়েবসাইটে সংযোজিত ডিজিটাল নিবন্ধন ফরমে আবেদনকারীর নাম, জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, মুঠোফোন নম্বর, ই-মেইল, ঠিকানা যথাযথভাবে পূরণ করে নিবন্ধন শেষ করতে হবে। যাঁরা সফলভাবে নিবন্ধন করবেন, তাঁদের অনুষ্ঠানস্থলে নিবন্ধনের কপিটি আনতে হবে।

১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর আয়োজন প্রসঙ্গে কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধে যাবেন। এরপর তিনি ঢাকায় জাতীয় শিশু দিবসের অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। এরপর বিকেলে শুরু হবে দুই পর্বের মূল অনুষ্ঠান। প্রথম অংশে থিম সং, উপস্থাপনা আছে। উপস্থিত থাকবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান। দ্বিতীয় পর্বে থাকবে বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আতশবাজি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্‌যাপন জাতীয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মো. রফিকুল ইসলাম, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।