বাঁশঝাড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্রের লাশ, আটক ৭

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নাটোর সদর উপজেলার একটি বাঁশঝাড় থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

গতকাল রোববার রাত নয়টার দিকে উপজেলার হালসা ইউনিয়নের নবীনকৃষপুর গ্রাম থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতজনকে আটক করে থানায় নিয়েছে পুলিশ।

নিহত ছাত্রের নাম কামরুল ইসলাম (২৩)। বাবার নাম আফাজ উদ্দিন। বাড়ি নবীনকৃষপুর গ্রামে। কামরুল গত শনিবার রাত থেকে নিখোঁজ ছিলেন।

কামরুল নাটোরের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রাজশাহী সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলোজির শিক্ষার্থী ছিলেন।

পুলিশ বলছে, এটি হত্যাকাণ্ড বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। কামরুলকে কোপানো হয়েছে ও একটি চোখ তুলে নেওয়া হয়েছে।

গত শনিবার সকালে সদর উপজেলার পাইকোড়দৌল এলাকার একটি বাঁশঝাড় থেকে হাসান আলী (১০) নামের এক শিশুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই ঘটনার রহস্য এখনো উদঘাটিত হয়নি।

আজ সোমবার সকালে নবীনকৃষপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, মাঠের মাঝের একটি বাঁশঝাড়ের পাশে মানুষের জটলা। সেখানে কামরুলের রক্তাক্ত লাশ পড়ে ছিল বলে জানান উপস্থিত লোকজন। বাঁশঝাড়ের আগাছায় তখনো রক্তের দাগ দেখা যাচ্ছিল।

ঘটনাস্থলে থাকা কামরুলের ভগ্নিপতি ইউপি সদস্য রমজান আলী জানান, এক কিশোরের মাধ্যমে গতকাল রাতে তাঁরা খবর পান। রাত ৯টার দিকে তাঁরা ঘটনাস্থলে এসে কামরুলের লাশ দেখতে পান। লাশের মাথায় ও ঘাড়ে ধারালো অস্ত্রের একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল। বাম চোখ উপড়ানো। উদ্ধারের পর লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ।

লাশটি প্রথম দেখতে পায় যে কিশোর সে জানায়, গতকাল সকালে বাঁশঝাড়ে আগাছা দিয়ে ঢাকা একটি লাশ দেখতে পায় সে। তবে ভয়ে সারা দিন কাউকে ঘটনাটি জানায়নি। বিকেলে কয়েক বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে সে আবার বাঁশঝাড়ে এসে লাশটি দেখতে পায়। কামরুল নিখোঁজ থাকার কথা জানতে পেরে বিষয়টি তাঁর পরিবারকে জানায় তারা।

আজ সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কামরুলের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় সেখানে মাতম চলছে। তাঁর মা ও বোন আহাজারি করছেন। অসুস্থ বাবা একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে নির্বাক বসে আছেন।

ছোট বোন মেরিনা খাতুন জানায়, তারা চার বোন ও এক ভাই। কামরুল এবার বিবিএ পরীক্ষা দিয়েছেন।

বাবা আফাজ উদ্দিন জানান, গত শনিবার রাত ৯টার দিকে কামরুলকে কে বা কারা মুঠোফোনে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান। রাতে বাড়ি না ফেরায় তাঁরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। পরদিন দুপুর পর্যন্ত তাঁর সন্ধান না পাওয়ায় তাঁরা ঘটনাটি সদর থানায় জানান। বিকেলে সদর থানার পুলিশ বাড়িতে এসে পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে কামরুলের ব্যাপারে কথা বলেন।

আফাজ উদ্দিনের ভাষ্য, প্রতিবেশী এক কলেজছাত্রীর সঙ্গে তাঁর ছেলে কামরুলের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এই সম্পর্কের কারণে তাঁকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে।

সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফরিদুল ইসলাম বলেন, কামরুলকে কে বা কারা কেন হত্যা করেছে, তা বের করার চেষ্টা চালছে। এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এক কলেজছাত্রী এবং কামরুলের বন্ধুসহ সাতজনকে রোববার রাতেই থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

ফরিদুল ইসলাম বলেন, কামরুলের মুঠোফোনটি পাওয়া যাচ্ছে না। সেটি উদ্ধার করা গেলে হত্যার রহস্য দ্রুত বের করা সম্ভব হবে।