ঢাবির ওই ছাত্রী ভুল করে কুর্মিটোলায় নেমেছিলেন

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

বান্ধবীর বাসা রাজধানীর শেওড়ায়। সেখানে যাওয়ার উদ্দেশেই তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে উঠেছিলেন। তবে ভুল করে শেওড়ার আগে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের কাছে বাস থেকে নেমে পড়েন তিনি। আর সেখানেরই কোনো একটি স্থানে ধর্ষণের শিকার হন।

ধর্ষণের শিকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীর মামা প্রথম আলোকে জানান, ঠিক কোথায় ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, তা তাঁরা এখনো জানতে পারেননি। ভাগনি মা-বাবা ও তাঁর (মামা) সঙ্গে হাসপাতালে কথা বলেছেন। তিনি (ভাগনি) জানান, শেওড়া যাওয়ার সময় ভুল করে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের কাছে নেমে পড়েছিলেন। হাসপাতালের আশপাশেই ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করছেন তাঁরা।

গুলশান থানার এক পুলিশ কর্মকর্তা প্রথম আলোকে জানান, তাঁরা ঘটনাস্থলটি খুঁজে দেখছেন। ঘটনাস্থলের ওপর ভিত্তি করে কোন থানা কাজ করবে, তা নির্ধারণ হবে।

ছাত্রীর মামার ভাষ্য, তাঁর ভাগনি বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত। কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত থাকার তথ্য তাঁদের জানা নেই।

ক্যান্টনমেন্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী সাহান হক জানান, ধর্ষণের ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছাত্রীর সঙ্গে গুলশান জোনের ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা দেখা করেছেন। পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলাটি করা হবে।

গতকাল রোববার গভীর রাতে ওই ছাত্রীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। তাঁকে হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে।

ওসিসি সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রীকে ধর্ষণের সব আলামত পাওয়া গেছে। আগে থেকে তাঁর শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা ছিল। ধর্ষণের সময় মারধর করা হয়েছে। সব মিলিয়ে তাঁর শারীরিক অবস্থা ভালো নেই।
ছাত্রীর চিকিৎসার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মেডিকেল কর্তৃপক্ষ। ছয় সদস্যের ওই কমিটির নেতৃত্বে আছেন গাইনি বিভাগের অধ্যাপক সালমা রউফ।

ওই ছাত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) একটি হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।

ছাত্রীর সঙ্গে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে যুক্ত একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি ওই ছাত্রীর সঙ্গে কথা বলার পর প্রথম আলোকে বলেন, শেওড়ায় বান্ধবীর বাসায় যেতে বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ওই ছাত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে ওঠেন। বাস থেকে কুর্মিটোলা এলাকায় নামার পর অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজন তাঁর মুখ চেপে ধরে। এতে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। এরপর তাঁকে ধর্ষণ করা হয়। রাত ১০টার দিকে চেতনা ফেরার পর তিনি সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে বান্ধবীর বাসায় যান। বান্ধবীকে ঘটনা জানান। এরপর সহপাঠীরা তাঁকে ক্যাম্পাসে নিয়ে আসেন। পরে তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

গত রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক হাসপাতালে যান এবং ছাত্রীর সঙ্গে কথা বলেন।