শীতকালীন উৎসবে ১৮০ ধরনের পিঠা

শীতের পিঠা উৎসবে বাহারি পিঠা। ব্রাহ্মণপাড়া, কুমিল্লা, ৮ জানুয়ারি। ছবি: মো. সোহরাব হোসেন
শীতের পিঠা উৎসবে বাহারি পিঠা। ব্রাহ্মণপাড়া, কুমিল্লা, ৮ জানুয়ারি। ছবি: মো. সোহরাব হোসেন

নিমকি, জুরা সেমাই, ত্রিভুজ, মরিচ, নারকেল, হালুয়া, চটা, মেরা, কামরাঙা, ডিমসুন্দরী, হৃদয়হরণ, খরগোশ, জামাই, বউ, পাখি, কবুতরসহ আরও কত নাম। এসবই পিঠার নাম।

প্রতিবছরের মতো এই বছরও কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার নাগাইশ এলাকার সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ মাঠে বাহারি পিঠা নিয়ে উৎসব ও প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। আজ বুধবার ১৮০ ধরনের পিঠা নিয়ে এই উৎসব ও প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

কলেজের শিক্ষার্থীরা তাঁদের বাড়িতে পিঠা বানিয়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন। কেউ কেউ পেয়েছেন পুরস্কার। আবার অনেকে পিঠা বিক্রি করে নগদ টাকাও পেয়েছেন। পিঠা উৎসবকে কেন্দ্র করে আশপাশ এলাকাও ছিল বেশ মুখরিত। উৎসবটি কলেজের নবীন-প্রবীণ এবং প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীর মিলনমেলায় পরিণত করে।

উৎসবে রসের হাঁড়ি, নকশি পিঠাঘর, গ্রামীণ পিঠাঘর, রসনা বিলাশ পিঠাঘর ও পানতোয়া পিঠাঘর নামে স্টল দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। ক্রমিক নম্বর দিয়ে ১৮০ ধরনের পিঠা ও বঙ্গবন্ধুর মুরাল আকৃতির পিঠা তৈরি করে প্রথম পুরস্কার পেয়েছে রসনা বিলাশ পিঠাঘর। আর দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে গ্রামীণ পিঠাঘর এবং তৃতীয় পুরস্কার জিতেছে রসের হাঁড়ি পিঠাঘর।

বাহারি পিঠার প্রদর্শনী। ব্রাহ্মণপাড়া, কুমিল্লা, ৮ জানুয়ারি। ছবি: মো. সোহরাব হোসেন
বাহারি পিঠার প্রদর্শনী। ব্রাহ্মণপাড়া, কুমিল্লা, ৮ জানুয়ারি। ছবি: মো. সোহরাব হোসেন

পিঠা উৎসব ও প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী অনুজা আক্তার, জান্নাত আক্তার, রুমি আক্তার, সফিকুল ইসলাম, পুষ্প আক্তার, সাইমন, মেহেদি হোসেন, সাইফুল ইসলাম ও আরিফ মিয়ার সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা জানান, পিঠা উৎসবকে কেন্দ্র করে পুরো এলাকায় একটি ব্যতিক্রম উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। গ্রামের লোকজনও উৎসব থেকে শীতের পিঠা কিনতে আসেন। উৎসবকে কেন্দ্র করে কয়েক সপ্তাহ ধরে পিঠা তৈরির কাজ করেছেন তাঁরা।

উৎসবে আসা কলেজটির প্রাক্তন কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, এই উৎসবে এসে পুরোনো অনেক বন্ধুর সঙ্গে দেখা হয়। গ্রামবাংলার হারিয়ে যাওয়া অনেক পিঠা উৎসবে এসে দেখা গেল। উৎসবটি যেন প্রতিবছরই হয়, এটাই তাঁদের প্রত্যাশা।

উৎসবে অতিথি ছিলেন কলেজটির প্রতিষ্ঠাতা ও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান সুলতান আহাম্মদ, ব্রাহ্মণপাড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. সৈয়দ আহাম্মদ লাভলু প্রমুখ।

এ উৎসব ও প্রতিযোগিতার আয়োজক সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের অধ্যক্ষ মো. খলিল উদ্দিন আখন্দ বলেন, গ্রামীণ বাংলার ঐতিহ্য অনেক পিঠা হারিয়ে যেতে বসেছে। উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষার্থীদের এই উৎসবে অংশগ্রহণের পাশাপাশি প্রতিযোগিতার মাধ্যমে হারিয়ে যাওয়া সুস্বাদু পিঠা ফিরিয়ে আনা। নতুন নতুন পিঠার সঙ্গে পরিচিতি হতে পেরেছে। এটাই তাঁদের সাফল্য বলে মনে করেন তিনি।