টঙ্গীর তুরাগপাড়ে মুসল্লিদের ঢল

আনুষ্ঠানিকভাবে ইজতেমা শুরু হবে আগামীকাল শুক্রবার। তবে আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই মানুষের ঢল নামতে থাকে ইজতেমা মাঠে। ছবিটি আজ সকালে টঙ্গীর ইজতেমা মাঠ থেকে তোলা। ছবি: আল-আমিন
আনুষ্ঠানিকভাবে ইজতেমা শুরু হবে আগামীকাল শুক্রবার। তবে আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই মানুষের ঢল নামতে থাকে ইজতেমা মাঠে। ছবিটি আজ সকালে টঙ্গীর ইজতেমা মাঠ থেকে তোলা। ছবি: আল-আমিন

আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই মেঘলা আকাশ। বৃষ্টি হবে হবে ভাব। সেই সঙ্গে শীতের প্রকোপ। এমন আবহাওয়া উপেক্ষা করে মানুষের ঢল নেমেছে গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগপাড়ে। এ ঢল বিশ্ব ইজতেমার। মুসল্লিদের পদচারণে মুখর পুরো ইজতেমা ময়দান।

আগামীকাল শুক্রবার ফজরের নামাজের পর আমবয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হবে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। এ পর্বে ইজতেমায় অংশ নেবেন মাওলানা সাদ কান্ধলভীর বিরোধী পক্ষ হিসেবে পরিচিত মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা। ইতিমধ্যে তাঁদের অধিকাংশ মাঠে প্রবেশ করেছেন।

তাবলিগ জামাতের বিবদমান বিরোধের কারণে এবারও বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে আলাদাভাবে। গত ২৮ অক্টোবর সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা ইজতেমা পালন করবেন ১০ থেকে ১২ জানুয়ারি। আর সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা ইজতেমা করবেন ১৭ থেকে ১৯ জানুয়ারি।

গতকাল বুধবার থেকেই দলে দলে ইজতেমা ময়দানে প্রবেশ করেন মুসল্লিরা। এর মধ্যে আজ ভোর থেকে শুরু হয় মানুষের ঢল। আজ সকাল সাড়ে ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ইজতেমা ময়দান ঘুরে দেখা যায়, দলে দলে ইজতেমা মাঠে প্রবেশ করছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মুসল্লিরা। তাঁদের কারও মাথায়, কারও কাঁধে আবার কারও হাতে একাধিক ব্যাগ। তাঁরা বাস, ট্রাক, ট্রেনে করে এসেছেন ইজতেমা মাঠে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কসংলগ্ন বিভিন্ন ফটক দিয়ে মাঠে প্রবেশ করছেন মুসল্লিরা। এরপর মাঠে খুঁজে বের করছিলেন এলাকাভিত্তিক নির্ধারিত জায়গা। মাঠের প্রবেশপথ বাটা গেটে কথা হয় ময়মনসিংহের আবদুল গফুরের সঙ্গে। তিনি বলেন, যানজটের ভয়ে তাঁরা একটু আগেভাগেই চলে এসেছেন ইজতেমা মাঠে।

জানতে চাইলে হলে ইজতেমার মিডিয়া সমন্বয়কারী জহির ইবনে মুসলিম বলেন, ‘ইতিমধ্যে বেশির ভাগ সাথিরা মাঠে প্রবেশ করেছেন।’

ইজতেমা ঘিরে প্রস্তুতি
এবার পুরো ইজতেমা ময়দানকে ঘিরে ৪৫০ সিসিটিভি ক্যামেরা থাকবে। মুসল্লিদের নিরাপত্তায় নিযুক্ত থাকবেন র‍্যাব, পুলিশ, বিজিবি ও আনসার সদস্যরা। এ ছাড়া থাকবে সাদাপোশাকের পুলিশ। প্রস্তুত থাকবেন জেলা প্রশাসনের ৩০টির মতো ভ্রাম্যমাণ আদালত। মাঠে নিয়োজিত থাকবে বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল।

মুসল্লিদের ব্যবহারের জন্য ৩১টি ভবনে আছে ৮ হাজার ৩৩১টি শৌচাগার। ১৭টি গভীর নলকূপ দিয়ে পানি সরবরাহ করা হবে মুসল্লিদের। তিনটি গ্রিড থেকে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। ৪টি শক্তিশালী জেনারেটর প্রস্তুত থাকবে। মুসল্লিদের পারাপারের জন্য সেনাবাহিনীর সাতটি ভাসমান সেতু প্রস্তুত করা হয়েছে ইতিমধ্যে। মুসল্লিদের যাতায়াতের সুবিধার্থে ১০টি বিশেষ ট্রেন চালু করা হবে এবং সব ট্রেনের টঙ্গী রেলস্টেশনে যাত্রাবিরতি দেওয়ার কথা আছে। এবার পুরো ইজতেমাকে ৯১টি খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬৪ জেলার লোকজন খিত্তা অনুসারে বসবেন।