দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে কুয়াশায় দুই ঘণ্টা ফেরি চলেনি

কুয়াশার কারণে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া এবং মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে দুই ঘণ্টার বেশি ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। এতে দৌলতদিয়া ঘাটে আটকা পড়ে কয়েক শ গাড়ি। ছবি: এম রাশেদুল হক।
কুয়াশার কারণে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া এবং মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে দুই ঘণ্টার বেশি ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। এতে দৌলতদিয়া ঘাটে আটকা পড়ে কয়েক শ গাড়ি। ছবি: এম রাশেদুল হক।

কুয়াশার কারণে আজ বৃহস্পতিবারও রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া এবং মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে দুই ঘণ্টার বেশি ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। গতকাল বুধবার সকালে এই নৌপথে কুয়াশার কারণে চার ঘণ্টার মতো ফেরিসহ নৌযান চলাচল বন্ধ থাকে। এতে উভয় ঘাটে আটকা পড়ে কয়েক শ গাড়ি। দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। আজ বেলা ২টা পর্যন্ত দৌলতদিয়ার তিন কিলোমিটার সড়কে যানবাহনের সারি ছিল।

আজ ভোর থেকে নদী অববাহিকায় কুয়াশা পড়লে সকাল ছয়টা থেকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এ সময় উভয় ঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া কয়েকটি ফেরি মাঝনদীতে পৌঁছে কুয়াশার কবলে পড়ে। ফেরির মাস্টাররা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে চালিয়ে ফেরি নিয়ে নিরাপদে ঘাটে পৌঁছান। দুই ঘণ্টা পর সকাল আটটার পর কুয়াশা কমে গেলে পুনরায় ফেরি চালু হয়। এতে উভয় ঘাটে কয়েক শ গাড়ি পারাপারের অপেক্ষায় ছিল।

গতকাল সকালে এই নৌপথে চার ঘণ্টা ফেরিসহ সব নৌযান বন্ধ থাকায় উভয় ঘাটে শত শত গাড়ি আটকা পড়ে। পারাপার হতে না পারায় আটকা থাকা গাড়ির যাত্রীরা চরম দুর্ভোগের শিকার হন। ওই সব গাড়ির রাতের মধ্যে নদী পাড়ি দেওয়া শেষ হওয়ার আগেই ফের আজ দুই ঘণ্টা নৌযান বন্ধ থাকে।

আজ দুপুরে দৌলতদিয়ায় দেখা যায়, ফেরিঘাট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে গাড়ির লাইন তিন কিলোমিটার ছাড়িয়ে গেছে। সাতক্ষীরা ছেড়ে আসা সাতক্ষীরা এক্সপ্রেসের সহকারী রবিউল ইসলাম বলেন, দুই ঘণ্টা ধরে ঘাটে গাড়ির লম্বা লাইনে আটকে আছি। হয়তো কিছুক্ষণের মধ্যে ফেরিতে উঠে যাব। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গাড়ির লাইন আরও লম্বা হচ্ছে।

যশোর থেকে আসা পণ্যবাহী গাড়ির চালাক আবুল কালাম বলেন, প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে ঘাটে লাইনে আটকে আছি। দুপুরের পর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে যেসব গাড়ি ছেড়ে আসছে, তাদের নদী পাড়ি দিতে আরও দীর্ঘ সময় আটকে থাকতে হবে। কারণ ওই সব অঞ্চল থেকে সকালে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী সব গাড়ি দুপুরের দিকে দৌলতদিয়ায় এসে পৌঁছায়।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক আবু আবদুল্লাহ রনি বলেন, যে কটি ফেরি আছে, সব কটি সচল থাকলে খুব বেশি একটা বেগ পোহাতে হয় না। কিন্তু মাঝেমধ্যে যান্ত্রিক ত্রুটিতে এক-দুটি বসে থাকলে সমস্যায় পড়তে হয়। এরপর কুয়াশার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কয়েক ঘণ্টা করে ফেরি বন্ধ থাকছে। একই সঙ্গে বিশ্ব ইজতেমাগামী গাড়ির কারণে বাড়তি চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। যে কারণে উভয় ঘাটেই আটকে থাকা গাড়ির যাত্রীদের দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া কার্যালয় জানায়, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ছোট-বড় মিলে ১৬টি ফেরি চলাচল করছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় কম। প্রতিদিন এখান দিয়ে চলাচলরত যাত্রী ও যানবাহন পারাপার নির্বিঘ্ন করতে ১৬ থেকে ১৭টি ফেরি সব সময় সচল থাকা দরকার। বর্তমানে ১৬টি ফেরি থাকলেও প্রায়ই এক-দুটি যান্ত্রিক ত্রুটিতে বিকল থাকছে। ফেরিস্বল্পতার মাঝে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে গাড়ি পারাপার বিঘ্নিত হওয়ায় ঘাটে গাড়ি আটকে থাকছে।