মতপ্রকাশে যেন বাধা না আসে: অ্যামনেস্টি

প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকারবিষয়ক সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। আজ শনিবার অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সাউথ এশিয়ার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে এই বিষয়ে একটি বিবৃতি দেয় সংগঠনটি।

ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র নাইমুল আবরারের অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগে করা মামলায় প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। গত বৃহস্পতিবার ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. কায়সারুল ইসলাম এ আদেশ দেন। আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।

আজ শনিবার অ্যামনেস্টি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘প্রথম আলোর সম্পাদকসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে আইনি কার্যক্রম যেন সঠিক পদ্ধতি মেনে চলে, সেটি নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের সরকারকে সম্ভাব্য সব সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিতে হবে। কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগে সরকারকে অবশ্যই সংযম প্রদর্শন করতে হবে, যেন বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর কোনো বাধা না আসে।’

প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির খবরটি গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেছে বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যম। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির ঘটনায় গতকাল শুক্রবার উদ্বেগ জানিয়েছেন দেশের ৪৭ জন বিশিষ্ট নাগরিক। বিবৃতিতে তাঁরা বলেছেন, ‘মামলাটি দায়েরের আগে-পরে এ বিষয়ে যেভাবে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা বক্তব্য দিয়েছেন এবং এই মামলায় প্রথম আলো সম্পাদককে যেভাবে সম্পৃক্ত করা হয়েছে, তাতে মামলাটি আমাদের কাছে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে হয়েছে।’

গত ৬ নভেম্বর নাইমুল আবরারের বাবা মজিবুর রহমান বাদী হয়ে পেনাল কোডের ৩০৪ (এ ) ধারায় অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগ করে ঢাকার আদালতে মামলা করেন। আদালত সেদিন নালিশি মামলাটি আমলে নিয়ে মোহাম্মদপুর থানাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন।

উল্লেখ্য, বিনা বিচারে আটক ব্যক্তিদের মুক্তির লক্ষ্যে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হিসেবে ১৯৬১ সালের ২৮ মে ব্রিটিশ আইনজীবী পিটার বেনেনসেন  অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল প্রতিষ্ঠা করেন। ধীরে ধীরে সংগঠনটি বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার সংরক্ষণের জন্য একটি সোচ্চার প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। বিশ্বজুড়ে ভিন্নমতাদর্শী হিসেবে আটক ব্যক্তিদের মুক্তি, দ্রুত বিচার, সব ধরনের উৎপীড়ন ও নির্যাতনের অবসান এবং মৃত্যুদণ্ড বন্ধে এই সংগঠন কাজ করে যাচ্ছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নিয়ে তারা বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে এবং এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধ–প্রতিকারের জন্য জনগণ ও সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে থাকে।

আরও পড়ুন: