আতিকুলের বক্তব্যে তাবিথের বিরক্তি প্রকাশ

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের নির্বাচনী প্রচার। আশকোনা দক্ষিণখান, ঢাকা, ২২ জানুয়ারি। ছবি: সাজিদ হোসেন
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের নির্বাচনী প্রচার। আশকোনা দক্ষিণখান, ঢাকা, ২২ জানুয়ারি। ছবি: সাজিদ হোসেন

গতকালের হামলার বিষয়ে আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী আতিকুল ইসলামের বক্তব্যে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী তাবিথ আউয়াল। তিনি বলেন, ‘জনসংযোগে গণজোয়ার দেখেই আমার প্রতিপক্ষ আতিকুল ইসলাম ভয় পেয়ে গেছেন। মানসিকভাবে অশান্তিতে আছেন। তাই তিনি সত্য ঘটনাকে নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষ বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন।’

আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় উত্তর সিটির ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডের হাজিক্যাম্পের সামনে নির্বাচনী জনসংযোগ শুরুর প্রাক্কালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তাবিথ এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘হামলায় আওয়ামী লীগের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মুজিব সারওয়ার উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা আমাকে চিহ্নিত করে হামলা করেছেন, যাতে আমি মাথা ও মুখে আঘাত পাই। এখন পুলিশকে প্রভাবিত করতে চেষ্টা করছেন। গত রাতে এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দাখিল করতে পারিনি। এখন আমরা নির্বাচন কমিশনের তদন্তের অপেক্ষায় আছি।’

বিএনপি নির্বাচন করছে না খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন করছে—আওয়ামী লীগ নেতাদের এমন বক্তব্যর জবাবে তাবিথ বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন আজকে বাংলাদেশের বৃহত্তর জনমানুষের মুক্তির সংগ্রাম। তাঁরা ভোটের মাধ্যমে রায় দিতে চান। কারণ, তাঁরা দুর্নীতি ও দুঃশাসনকে প্রশ্রয় দেবেন না। খালেদা জিয়ার মুক্তি সবার মুক্তিসংগ্রামকে একত্র করবে।

তাবিথ যখন হাজিক্যাম্পের সামনে পথসভা করছিলেন, তখন সড়কের বিপরীত পাশে আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা জটলা বেঁধে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সাংবাদিকেরা দুপক্ষের মুখোমুখি অবস্থান সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তাবিথ বলেন, ‘আমাদের কোনো অবস্থানই কখনো মুখোমুখি হয়নি। আমি অনেক আওয়ামী কাউন্সিলর প্রার্থীর কাছে ভোট চেয়েছি। হাত মিলিয়েছি। শুভেচ্ছা বিনিময় করেছি। আজও লক্ষ্য করেছি, আমাদের নেতা আ স ম রব যখন বক্তব্য দিচ্ছিলেন রাস্তার উল্টোদিকে আওয়ামী নেতা কর্মীরা জড়ো হয়েছেন। তারা বক্তব্য শুনছিলেন। তারা সমর্থন করে একমত হয়েছেন। তাতে বোঝা যায়, আওয়ামী লীগের দু-একজন বিশেষ মহলের নেতার আচরণ দেখে বিরক্ত হচ্ছেন। ঘৃণা করছেন।’

গতকালের হামলার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে পদক্ষেপের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তাবিথ বলেন, ‘আমরা অভিযোগ দাখিল করেছি। আমরা দেখব নির্বাচন কমিশন তাদের ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে তদন্ত করে কী প্রতিবেদন দেয়। কমিশনের উচিত ছিল নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের ব্যাপারে তৎপর হওয়া। ম্যাজিস্ট্রেটরা সরকারের বেতন নিচ্ছেন, অথচ দায়িত্ব পালন করছেন না।’

হাজিক্যাম্পের সামনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা আ স ম রব বক্তব্য দেন। তিনি খালেদা জিয়ার মুক্তি ও ধানের শীষে ভোট চান। তিনি বলেন, ‘ধানের শীষে ভোট দিলে দেশের মানুষ শান্তি পাবে, মুক্তি পাবে। আপনারা ভোট দিতে যাবেন, কারও কথা শুনবেন না, ভোট দিয়ে বিকেল চারটার পর রেজাল্ট না নিয়ে বাড়ি ফিরবেন না। প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসাররা কারচুপি করলে রুখে দাঁড়াবেন। গতকাল হামলা হয়েছে, সরকারকে জানিয়ে দিতে চাই গুন্ডামি করে, সন্ত্রাসী করে তাবিথকে পরাজিত করতে পারবেন না। আপনাদের একটি ভোট খালেদা জিয়াসহ হাজার হাজার কারাবন্দী নেতা–কর্মীর এবং গণতন্ত্রের মুক্তির পথকে সুগম করবে।’

হাজিক্যাম্প থেকে তাবিথ দক্ষিণখানের প্রেমবাগান, গাওয়াইর হয়ে চেয়ারম্যানবাড়ী ও থানা রোডে জনসংযোগ করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে বিএনপি নেতাদের মধ্যে শামা ওবায়েদ, সাইফুল আলম, কলিমউদ্দিন আহমেদ মিলন, গফুর ভূঁইয়া, ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন (টিফিন ক্যারিয়ার প্রতীক), ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী আলী আকবরসহ (টিফিন ক্যারিয়ার) বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা–কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।