ডেঙ্গু-দুর্নীতি-দুঃশাসন থেকে মুক্তির তারিখ ১ ফেব্রুয়ারি: তাবিথ

রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় নির্বাচনী প্রচার চালান ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে (ডিএনসিসি) বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল। ঢাকা, ২৪ জানুয়ারি। ছবি: আশরাফুল আলম
রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় নির্বাচনী প্রচার চালান ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে (ডিএনসিসি) বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল। ঢাকা, ২৪ জানুয়ারি। ছবি: আশরাফুল আলম

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপির প্রার্থী তাবিথ আউয়াল বলেছেন, ডেঙ্গু, দুর্নীতি, দুঃশাসনসহ সব সমস্যা থেকে মুক্তির তারিখ ১ ফেব্রুয়ারি। নির্বাচনী গণসংযোগ শুরুর আগে আজ শুক্রবার রাজধানীর বাড্ডা লুৎফুন টাওয়ারে এক পথসভায় তিনি এ কথা বলেন।

তাবিথ বলেন, ঢাকাবাসী চান আর কখনোই যেন ডেঙ্গু, দূষণ ও দুর্নীতির জন্য কেউ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। দুর্নীতি থেকে ঢাকা সিটি করপোরেশনকে মুক্ত করতে হবে। ঢাকাবাসীর নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে হবে। সব সমস্যা থেকে মুক্তির তারিখ হচ্ছে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি। তিনি বলেন, ঢাকায় বিনা অপরাধে, সড়ক দুর্ঘটনায়, ডেঙ্গুতে যেসব লোক মারা গেছেন, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তার বিচার করতে হবে।

এ সময় তাবিথ আউয়াল নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘সবাইকে বলছি, সাহসের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ থাকবেন। ওনারা (আওয়ামী লীগ) আপ্রাণ চেষ্টা করবেন আমাদের নির্বাচন থেকে সরিয়ে দিতে। ওনারা ভোটের মাঠে কোনো দিনই আমাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। যখন পারবে না তখন আরও হামলা করবে, মামলা করবে। যত বাধাই আসুক, আমরা সাহসী মন নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট কেন্দ্রে যাব।’

গতকাল বৃহস্পতিবার গণসংযোগে তাবিথ আউয়াল জানান, তিনি উত্তর সিটি করপোরেশনের ৫৪টি ওয়ার্ডের ৩২৫ কিলোমিটার পথ হেঁটে নির্বাচনী প্রচার চালিয়েছেন। আজ শুক্রবার তাবিথ বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন ৫৪ ওয়ার্ডে আমরা হেঁটে হেঁটে ভোটারদের কাছে গিয়েছি, ভোট চেয়েছি, দোয়া চেয়েছি। জনগণ শুধু উন্নয়ন চাচ্ছেন না। তাঁরা চান বেগম খালেদা জিয়া যাতে আর এক মুহূর্তও কারাগারে না থাকেন।’

বাড্ডার পথসভা ও জনসংযোগে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা আ স ম আবদুর রব, বিএনপির নেতা শামসুজ্জামান দুদু, মাহবুব উদ্দিন খোকন, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান, যুবদলের সাইফুল আলম, ২১ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদপ্রার্থী শামসুল আলম, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদপ্রার্থী আয়েশা আক্তার প্রমুখ।

কোকো-আনিসুল হকের কবর জিয়ারত

দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে সঙ্গে নিয়ে শুক্রবার সকালে বনানী কবরস্থানে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর কবর জিয়ারত করেন তাবিথ আউয়াল। সেখানে ঢাকা দক্ষিণে দলের মেয়র পদপ্রার্থী ইশরাক হোসেনও ছিলেন। এরপর তাবিথ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আনিসুল হকের কবর জিয়ারত করেন। সেখানেই নানা, নানি ও মামা-মামির কবর জিয়ারত করেন।

এরপর বনানী থেকে প্রচার বাসে করে তাবিথ আউয়াল বাড্ডার লুৎফুন টাওয়ারে পথসভা করেন। সেখান থেকে হেঁটে খালপাড় দিয়ে বনশ্রী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে গিয়ে জুমার নামাজ পড়েন। নামাজ শেষে তিনি সবার কাছে ভোট চান। সেখানে কয়েক হাজার দলীয় নেতা-কর্মী এবং সমর্থক জড়ো হন। তাঁরা ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই, ধানের শীষে ভোট চাই’- প্রভৃতি স্লোগান দেন।

এরপর ২২ নম্বর ওয়ার্ডে ধানের শীষের পাশাপাশি বিএনপি-সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী ফয়েজ আহমেদের (ঘুড়ি মার্কা) জন্য প্রচার চালান তাবিথ। সেখান থেকে বাসে কারওয়ান বাজার নেমে খ্রিষ্টানপাড়া, তেজতুরীপাড়া, ফার্মগেট হলিক্রস কলেজ রোড হয়ে তেজগাঁও রেলস্টেশন রোডে গণসংযোগ করেন। শেষে কারওয়ান বাজারের পেট্রোবাংলার সামনে পথসভা করেন। এ সময় ২৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী আজিজুল রহমান (ঘুড়ি) ও নারী কাউন্সিলর রোকেয়া সুলতানার (আনারস) জন্য তিনি ভোট চান।

‘কারওয়ান বাজারে ব্যাপক চাঁদাবাজি হচ্ছে’

পথসভায় তাবিথ আউয়াল বলেন, ‘মানুষ চরম ভয় এবং আতঙ্কে বাস করছে। শহরে নিরাপত্তা নেই। দূষণে ভরে যাচ্ছে। বিশেষ করে এই কারওয়ান বাজারে অনেক সমস্যা। কয়েকবার অগ্নিদুর্ঘটনায় অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা বারবার দাবি জানিয়েছি, তাদের পুনর্বাসন করা হোক। কিন্তু আজ পর্যন্ত করা হয়নি। কারওয়ান বাজারে ব্যাপক চাঁদাবাজি হচ্ছে, অনেকে মাদকাসক্ত হচ্ছে। আমরা চাচ্ছি, এগুলো দ্রুত বন্ধ হোক।’

তাবিথ বলেন, ‘কারওয়ান বাজারে সারা দেশ থেকে মালামাল আসে। এখান থেকে ঢাকা শহরের অলি-গলিতে যায়। কিন্তু এখানে ট্রাক স্ট্যান্ড ও পার্কিংয়ের বিশাল সংকট। তাহলে ঢাকায় কী উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা কথা দিচ্ছি, নির্বাচিত হলে প্রতিটি প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করব।’