পঞ্চগড়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে পাথরশ্রমিক নিহত

পুলিশ ও পাথরশ্রমিকদের সংঘর্ষে আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। ছবি: রাজিউর রহমান
পুলিশ ও পাথরশ্রমিকদের সংঘর্ষে আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। ছবি: রাজিউর রহমান

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় পাথর উত্তোলনের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধের ঘটনায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জুমার উদ্দীন (৬০) নামের এক পাথরশ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ সময় পুলিশ-র‌্যাবের সদস্যসহ আহত হয়েছেন অন্তত ২০ ব্যক্তি। আজ রোববার সকাল পৌনে ১০টা থেকে শুরু করে বেলা ২টা পর্যন্ত পঞ্চগড়-বাংলাবান্ধা মহাসড়কের ভজনপুর এলাকায় থেমে থেমে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এ সময় আন্দোলনকারীরা পুলিশের তিনটি গাড়ি ভাঙচুর ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশও পাল্টা কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার ভজনপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় কোদাল দিয়ে মাটি খনন করে পাথর উত্তোলনের পাশাপাশি অবৈধ মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলন করা হচ্ছিল। স্থানীয় বিভিন্ন সংগঠন ও লোকজনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ছয় মাস আগে পঞ্চগড়ে পাথর উত্তোলন সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। এতে শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছিল। পাথর উত্তোলনের দাবিতে গতকাল শনিবার রাতে ভজনপুর বাজারে ঢোল পিটিয়ে আজ সকাল থেকে আন্দোলনের ডাক দেন পাথরশ্রমিকেরা। ঘোষণা অনুযায়ী, সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ভজনপুর এলাকায় পঞ্চগড়-বাংলাবান্ধা মহাসড়কে তাঁরা জড়ো হতে শুরু করেন। একপর্যায়ে তাঁরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে আন্দোলনকারীরা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। পরে পুলিশও পাল্টা লাঠিচার্জ ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশ নীলফামারী র‌্যাব-১৩–এর সহযোগিতা নেয়। এ সময় অন্তত ২০ ব্যক্তি আহত হন। বেলা পৌনে তিনটার দিকে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শ্রমিক জুমার উদ্দীন।

পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) সিরাজউদ্দৌলা পলিন প্রথম আলোকে বলেন, নিহত ব্যক্তির শরীরের বেশ কয়েকটি জায়গায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।

পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী প্রথম আলোকে বলেন, অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করতে পারছে না বলেই এই আন্দোলন ডাকা হয়েছিল। মহাসড়ক অবরোধের সময় পুলিশ সদস্যরা সেখানে গেলে তাঁরা লাঠিসোঁটা নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা করেন এবং পুলিশকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। একপর্যায়ে পুলিশ সেখান থেকে বের হওয়ার জন্য লাঠিচার্জ করে এবং কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। এতে আটজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।