ট্রেনের জন্য অপেক্ষা ফুরাল ৪৫ বছর পর

পাবনার বেড়া উপজেলায় চালু হওয়া রেলপথে নতুন ট্রেন দেখতে ভিড় জমান স্থানীয়রা। গতকাল বেড়ার ঢালারচর স্টেশনে। প্রথম আলো
পাবনার বেড়া উপজেলায় চালু হওয়া রেলপথে নতুন ট্রেন দেখতে ভিড় জমান স্থানীয়রা। গতকাল বেড়ার ঢালারচর স্টেশনে। প্রথম আলো

পাবনার বেড়া উপজেলার ঢালারচর থেকে রাজশাহী রুটে গতকাল রোববার আন্তনগর ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। ২০১৩ সালে নির্মাণকাজ শুরুর সাত বছর পর রেলপথটি উদ্বোধন করা হয়েছে গতকাল। সকালে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের পর বেলা ১১টা ৩৫ মিনিটে ট্রেনটি ‘ঢালারচর এক্সপ্রেস’ নামে ঢালারচর থেকে রাজশাহীর উদ্দেশে ছেড়ে যায়। 

১৯৭৪ সালে ঈশ্বরদী থেকে বেড়ার নগরবাড়ী পর্যন্ত রেলপথ স্থাপন প্রকল্পের কাজ হাতে নেওয়া হয়। সে সময় রেলপথের জন্য জমিও অধিগ্রহণ করা হয়েছিল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যায়। তখন থেকেই রেলপথের দাবি জানিয়ে আসছিলেন বেড়া ও সাঁথিয়া উপজেলার বাসিন্দারা। প্রায় ৪৫ বছর পর তাঁদের সেই দাবি পূরণ হলো।

ট্রেন চালু হওয়া উপলক্ষে গতকাল পাবনার বেড়া ও সাঁথিয়া উপজেলাবাসী আনন্দে মেতে ওঠেন। ট্রেন চলাচলের উদ্বোধনের স্থান ঢালারচরসহ নতুন স্টেশনগুলোতে উৎসাহী ও কৌতূহলী মানুষের ঢল নামে। বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল বিভাগীয় (ঈশ্বরদী) কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালে রেলপথটির নকশায় কিছু পরিবর্তন এনে নগরবাড়ীর পরিবর্তে রেলপথটি ঈশ্বরদী থেকে পাবনা হয়ে বেড়া উপজেলার ঢালারচর পর্যন্ত করা হয়। এতে বরাদ্দ দেওয়া হয় ৯৮২ কোটি ৮৬ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। ২০১৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ মাঠে এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রেলপথ নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন।

গতকাল ঢালারচর স্টেশনের পাশে আয়োজন করা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পাবনা-২ আসনের সাংসদ আহমেদ ফিরোজ কবিরসহ জেলা প্রশাসন ও রেলপথ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। রেলওয়ে সূত্র জানায়, ঢালারচর এক্সপ্রেস সকাল ৭টা ২৫ মিনিটে ঢালারচর থেকে ছেড়ে বেলা ১১টা ১০ মিনিটে রাজশাহী পৌঁছাবে। আবার বিকেল ৪টা ২৫ মিনিটে রাজশাহী থেকে ছেড়ে রাত ৮টা ১০ মিনিটে ঢালারচর পৌঁছাবে।

ঢালারচর স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, প্রথম যাত্রা উপলক্ষে পুরো ঢালারচর এক্সপ্রেস ট্রেনটিকে ফুল, বেলুন দিয়ে সাজানো হয়েছে। ট্রেনের পাশে দাঁড়িয়ে দল বেঁধে ছবি তুলছিলেন সাঁথিয়া উপজেলা থেকে আসা সুমন মাহমুদ, কবীর হোসেনসহ ছয় থেকে সাতজন তরুণ। তাঁরা জানান, এই পথে ট্রেনে প্রথম যাত্রার স্মৃতি ধরে রাখতে ঢালারচর থেকে সাঁথিয়া উপজেলার সাঁথিয়া রাজাপুর পর্যন্ত যাবেন তাঁরা। 

বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল বিভাগীয় (ঈশ্বরদী) কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) আসাদুল হক বলেন, ‘ঢালারচর থেকে পাবনা হয়ে রাজশাহী পর্যন্ত আপাতত একটি ট্রেনই চলবে। পরে এই পথে ট্রেন বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে।’