বিজিএমইএ ভবন ভাঙার মূল কাজ শুরুই হয়নি

এক সপ্তাহ আগে হাতিরঝিলের বিজিএমইএ ভবন প্রতীকীভাবে ভাঙার কাজের উদ্বোধন করা হলেও বাস্তবে এখন পর্যন্ত ভাঙা শুরু হয়নি। এখন শুধু ১৬ তলা ভবনের ওপরের দুটি তলায় জমে থাকা আবর্জনা, ভাঙা টাইলস ও পরিত্যক্ত কাগজপত্র পরিষ্কার করা হয়েছে। ভাঙার জন্য যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে বিদ্যুতের প্রয়োজন হবে। কিন্তু সে সংযোগ এখনো পাওয়া যায়নি। 

তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠনের নির্মিত বিজিএমইএ ভবন ভাঙার কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়েছে গত ২২ ডিসেম্বর। গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম প্রতীকীভাবে ভাঙার কাজ শুরু করেন। তখন বলা হয়েছিল, এক সপ্তাহের মধ্যে ভাঙার মূল কাজ শুরু হবে। চট্টগ্রামভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ফোর স্টার এন্টারপ্রাইজ ভবন ভাঙার কাজের ঠিকাদার। 

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সদস্য (উন্নয়ন) ও ভাঙার কাজের তত্ত্বাবধায়ক কমিটির আহ্বায়ক সামসুদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ভবনের নিচতলার সামনে বিজিএমইএর কিছু জিনিসপত্র রাখা ছিল। সেগুলো নিয়ে সামান্য জটিলতা দেখা দিয়েছিল, তা মিটে গেছে। এ ছাড়া দুটি তলার ময়লা ইতিমধ্যে পরিষ্কার করা হয়েছে। জোরদার নিরাপত্তায় কাজ যথাসময়েই শেষ হবে। গতকাল বুধবার বিজিএমইএ ভবন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নিচে অনেকগুলো বস্তা বাঁধা। একজন শ্রমিক জানান, ওপরের দুটি তলা থেকে আলাদাভাবে বস্তায় ভরা হয়েছে প্লাস্টিকসামগ্রী, টাইলস, কাগজ ইত্যাদি। এগুলো আপাতত এখানে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া সেখানে রয়েছে বিজিএমইএর নিজস্ব কিছু ইস্পাতসামগ্রী। সেগুলো বিজিএমইএ নিয়ে যাবে। 

 ফোর স্টার এন্টারপ্রাইজের পরিচালক নসরুল্লাহ খান বলেন, বস্তাবন্দী আবর্জনা সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়িতে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। তা সম্ভব না হলে এগুলো রাখার জন্য আলাদা জায়গা দেখতে হবে। তিনি বলেন, বৈদ্যুতিক সংযোগের জন্য আবেদন জানানো হয়েছে। 

সংযোগ পাওয়ার পর দীর্ঘ ও উচ্চক্ষমতার লিফটিং ক্রেনের মাধ্যমে ভবনের কাচ ও অন্য সামগ্রী নামানো হবে। এই ক্রেনে একবারে ২০০ কেজি ওজনের জিনিস নামানো যায়। কাচ নামানোর পর নিরাপত্তার জন্য ও ধুলা ছড়ানোর বিষয় রোধ করতে ভবনের চারদিকে ভারী চট লাগানো হবে। 

জানা যায়, ভবনে কোনো বিপজ্জনক সামগ্রী থাকলে তা প্রথমেই অপসারণ করা হবে। ভবনের সামনের বেইলি ব্রিজটি সরিয়ে কাজের সুবিধার জন্য সেখানে একটি রাস্তা তৈরি করা হবে। ভারী যন্ত্রপাতি ও যানবাহন রাখার জায়গাও তৈরি করা হবে। বাইরের কাচ সরানোর পর বৈদ্যুতিক ও গ্যাস, পানির ফিটিংস সরানো হবে। তারপর ওপর থেকে ছাদ, কংক্রিটের বিম ও কলাম ভাঙার কাজ শুরু হবে। 

ভাঙার কাজে ব্যবহার করা হবে এক্সকাভেটর, বুলডোজার, কংক্রিট জ্যাক হামার, ড্রাম ট্রাক, ফর্ক লিফট, ওয়েল্ডিং মেশিন, গ্যাস কাটার ইত্যাদি। এগুলোর সবই ফোর স্টার এন্টারপ্রাইজের কাছে রয়েছে বলে পরিচালক জানান। চট্টগ্রাম থেকে শিগগিরই এগুলো আনা হবে।