ভৈরবে মাদক কারবারিদের হাতে পুলিশের সোর্স খুন?

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে আজ বৃহস্পতিবার আবুল কাসেম নামে পুলিশের এক সোর্সের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে আজ বৃহস্পতিবার আবুল কাসেম নামে পুলিশের এক সোর্সের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে আবুল কাসেম (৫০) নামের এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে পৌর শহরের স্টেশন এলাকার রেলওয়ে কলোনির সড়কের পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি অন্তত ২০ বছর ধরে পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করছেন।

কাসেমের পরিবারের সদস্যদের দাবি, স্থানীয় মাদক কারবারিরা মুঠোফোনে কাসেমকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছেন। তিন মাস আগে একই চক্র কাসেমের ছেলে মো. আকাশকে (২৫) হত্যার উদ্দেশে ছুরিকাঘাত করেছিলেন।

স্থানীয়দের ভাষ্য, কাসেমের বাড়ি পৌর শহরের আমলাপাড়ায়। তাঁর স্ত্রী, দুই ছেলে ও দুই মেয়ে আছে। পুলিশের সোর্স পরিচয়ের পাশাপাশি নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে তিনি যুক্ত ছিলেন। মাদক ব্যবসায়ীদের সহযোগী হিসেবে তিনি কাজ করতেন। কখনো কখনো তিনি মাদক ব্যবসায়ীদের বিপদের কারণ হয়ে উঠতেন। কাসেমের বিরুদ্ধে ভৈরব থানায় একাধিক মামলা আছে। এক সময় তিনি স্থানীয় প্রভাবশালী মাদক ব্যবসায়ীদের রোষানলে পড়েন। এর জের ধরে তিন মাস আগে কাসেমের ছেলে আকাশকে ছুরিকাঘাত করা হয়। দুই মাস ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে এখন তিনি বাড়িতে অবস্থান করছেন। কিন্তু স্বাভাবিক আর চলাফেলা করতে পারেন না। এর মধ্যে আজ কাসেমের লাশ উদ্ধার করা হলো।

নিহত কাসেমের স্ত্রী হাসনা হেনার দাবি, পঞ্চবটি ও আমলাপাড়ার কয়েকজন মাদক কারবারির সঙ্গে কাসেমের সম্পর্ক ভালো যাচ্ছিল না। কয়েক দিন মাদক ব্যবসায়ী সানু মিয়া ও সুমি বেগম তাঁকে মেরে ফেলার হুমকি দেন। গতকাল রাত সাড়ে আটটার দিকে কাসেমকে ফোন দেন আরেক মাদক ব্যবসায়ী রহিমা। ফোন দিয়ে রহিমা তাঁর বাড়িতে যেতে বলেন। কাসেম সেখানে যান। রাত ১২টা পর্যন্ত কাসেমের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ ছিল। এরপর ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। হাসনার দাবি, ‘আমার স্বামী মাদক ব্যবসায়ী রহিমা, আলম, সানু ও সুমি চক্রের হাতে খুন হয়েছেন।’

ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিন বলেন, কাসেমের শরীরে দৃশ্যমান আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে।

অভিযোগ বিষয়ে রহিমা বেগম মুঠোফোনে কাসেমকে ডেকে আনার কথা অস্বীকার করেন। কোনো বিষয় নিয়ে কাসেমের সঙ্গে উল্লেখ করার মতো দ্বন্দ্ব ছিল না বলেও দাবি তাঁর। সানু ও সুমি জানান, কাসেম স্থানীয়দের নানাভাবে হয়রানি করে আসছিলেন। অনেক সাধারণ মানুষ কাসেমের মাধ্যমে হয়রানির শিকার হয়েছেন। এলাকায় কাসেমের শত্রুপক্ষ ছিল। তাঁরা তাঁকে হত্যা করতে পারেন।