৪টি কুকুরছানাকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জিডি

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় চারটি কুকুরছানাকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। দুগ্ধপোষ্য কুকুরছানাগুলোকে এক পা ভাঙা মা কুকুরের সামনে হত্যার ঘটনায় পরিবেশবাদী সংগঠন পিপল ফর অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন, আলমডাঙ্গা উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও থানা-পুলিশ আইনি লড়াই শুরু করেছে।

এ ঘটনায় আলমডাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হেলেনা আক্তার অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলার অনুমতি চেয়ে আজ বৃহস্পতিবার আলমডাঙ্গা আমলি আদালতে আবেদন করেছেন।

আলমডাঙ্গা থানার পরিদর্শক (অপারেশন) স্বপন কুমার দাস বলেন, আদালত থেকে অনুমতি পাওয়ার পর অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা এবং আইন অনুযায়ী সবই করা হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পিপল ফর অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি মো. সাদ্দাম হোসেন ২৮ জানুয়ারি আলমডাঙ্গা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ২২ জানুয়ারি বেলা দুইটায় আলমডাঙ্গা থানাপাড়ার বাসিন্দা রূপক মিয়া ও তাঁর মাইক্রোবাসের সহকারী সামিউল হোসেন চারটি কুকুরছানাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছেন। তাঁরা পঙ্গু মা কুকুরের কাছ থেকে ছানাগুলোকে কেড়ে নিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে, বাঁশ দিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে জখম করে পানিতে চুবিয়ে হত্যা করেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা নিষেধ করলেও তা না শুনে ওই দুজন উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। কুকুরছানাগুলোর মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর সেগুলোকে এলাকার একটি পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়।

অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে সাদ্দাম হোসেন বলেন, প্রাণী কল্যাণ আইন ২০০৯ এর ৭ ধারার ২ উপধারা অনুযায়ী আইনত দণ্ডনীয় ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এই আইনে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ছয় মাসের কারাদণ্ড অথবা ১০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।

সাদ্দাম হোসেনের লিখিত আবেদনের সূত্র ধরে আলমডাঙ্গা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আবদুল্লাহহিল-কাফি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিটন আলীকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ২৮ জানুয়ারি রাতে আলমডাঙ্গা থানায় লিখিত অভিযোগ দেন তিনি। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, থানাপাড়ায় চারটি কুকুরের বাচ্চা পিটিয়ে মারার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া পাওয়া গেছে। দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা তাঁর লিখিত অভিযোগের সঙ্গে পরিবেশবাদী সংগঠনের অভিযোগটিও সংযুক্ত করে দেন।

এদিকে আলমডাঙ্গা থানার পুলিশ প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার লিখিত অভিযোগটিকে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হিসেবে গ্রহণ করেন। বিষয়টি তদন্তের জন্য এসআই হেলেনা আক্তারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। সরেজমিন তদন্ত করে ওই কর্মকর্তাও ঘটনার সত্যতা পান। এরপর অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলার অনুমতি চেয়ে আলমডাঙ্গা আমলি আদালতে আজ বৃহস্পতিবার সকালে আবেদন করেছেন তিনি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত রূপক মিয়া ও সামিউল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাঁদের পাওয়া যায়নি।