ভোটের দিন নিয়ে শঙ্কিত ইশরাক

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন। ফাইল ছবি
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন। ফাইল ছবি

সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটানোর জন্য আওয়ামী লীগ ঢাকার বাইরে থেকে লোক এনেছে—এমন দাবি করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেন বলেছেন, এ সংক্রান্ত একটি ‘ডকুমেন্ট’ তাঁর কাছে আছে। ভোটের দিন কি হতে যাচ্ছে, এ নিয়ে তিনি শঙ্কিত।

আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচারের শেষ দিন বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এমন শঙ্কার কথা বলেন ইশরাক হোসেন। বিএনপির এই মেয়র প্রার্থী বলেন, ‘গতকাল বুধবার রাতে যুবদল মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মজনুর বাসায় অভিযান চালানো হয়েছে, আরও অনেক জায়গায় অভিযান চালিয়েছে। বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর হামলায় যারা আহত হয়েছেন, তাদের বাসা বাড়িতেও অভিযান চালানো হয়েছে। আমরা জানি না নির্বাচনের দিন কি হবে, দেখা যাক পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়।’

গত ১০ জানুয়ারি প্রতীক বরাদ্দের পর প্রতিদিনই হাজারো নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে জনসংযোগ করেছেন ইশরাক হোসেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার সবচেয়ে কমসংখ্যক কর্মীদের নিয়ে গোপীবাগ ও টিকাটুলি এলাকায় ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা করেন তিনি। গোপীবাগ এলাকাতেই ইশরাক হোসেনের বাসা।

গত ২৬ জানুয়ারি টিকাটুলি এলাকাতেই বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের পরে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনে ঘটে। এতে সাংবাদিকসহ দুই দলের ২৬ জন আহত হন। বৃহস্পতিবার একই এলাকায় জনসংযোগের কারণে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কঠোর অবস্থান নিতে দেখা গেছে। সড়কের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে অবস্থান ছাড়াও ইশরাকের জনসংযোগের সামনে ও পেছনের দিকে সার্বক্ষণিক পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি ছিল। বিশেষ করে টিকাটুলির যে স্থানে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল ওই এলাকা হয়ে ইশরাকের জনসংযোগ অতিক্রম করার সময় পুলিশ সদস্যদের বেশ সতর্ক থাকতে দেখা গেছে।

‘লাগারে লাগা-ধান লাগা, ডোবারে ডোবা-নৌকা ডোবা’ স্লোগানকে ঘিরে ওই দিন সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছিল। তবে বৃহস্পতিবার ‘লাগারে-লাগা, ধান-লাগা’ স্লোগানেই সীমাবদ্ধ ছিলেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। পুলিশ বিএনপির কর্মীদের বারবার সংযত থেকে জনসংযোগ চালাতে নির্দেশনা দেয়।

ইশরাকের জনসংযোগে থাকা কয়েকজন প্রথম আলোকে বলেন, বহিরাগতদের ধরতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী যে অভিযান শুরু করেছে, এ নিয়ে বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা শঙ্কিত। তাদের ধারণা, বিএনপির নেতা-কর্মীদের চাপে রাখতেই এই অভিযান। তাই নির্দেশনা ছিল বেশি সংখ্যক নেতা-কর্মী যাতে প্রচারে অংশ না নেন। এ জন্যই বৃহস্পতিবার প্রচারে লোকজন কম হয়েছে।

বিকেল সাড়ে চারটার দিকে গোপীবাগের বাসা থেকে প্রচার শুরুর আগে বিএনপির এই মেয়র প্রার্থী বলেন, পোলিং এজেন্ট ও কেন্দ্র পরিচালনা কমিটি নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না। তাদের নেতা-কর্মীরা মাঠে থাকবেন। একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কর্মীরা সক্রিয় রয়েছেন। ভোটারদের সহযোগিতা করার জন্য যা যা দরকার দলীয় কর্মীরা তাই করবেন।

আপনার ব্যক্তিগত সহকারীকে আটক করা হয়েছে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ এমনটাই বলেছে—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ইশরাক বলেন, তাঁর কোনো ব্যক্তিগত সহকারী নেই। তিনি দলীয়ভাবে নির্বাচন করছেন। তাঁর জনসংযোগে স্বপ্রণোদিত হয়ে হাজার হাজার নেতা-কর্মী আসছেন, বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছেন। কে কি করল এটা তিনি বলতে পারবেন না।

ধানের শীষের পক্ষে ব্যাপক জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে দাবি করে ইশরাক হোসেন বলেন, নির্বাচনের দুই দিন আগে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য এ ধরনের অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।