জয় জ্যোতিষবিদ্যায় পারদর্শী হচ্ছেন: ফখরুল

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও সজীব ওয়াজেদ জয়। ফাইল ছবি
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও সজীব ওয়াজেদ জয়। ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় জ্যোতিষবিদ্যায় পারদর্শী হয়ে উঠছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তাঁকে রাজ জ্যোতিষী হিসেবে নতুন নিয়োগ দেওয়া হবে কি না, তা বিবেচনার জন্য প্রধানমন্ত্রীকেও অনুরোধ করেছেন তিনি।

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি ফল প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। তাঁর এই জরিপ অনুযায়ী দুই নির্বাচনেই আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিপুল জয় হবে। সজীব ওয়াজেদের এই জরিপের ফলাফলের পরিপ্রেক্ষিতেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ শুক্রবার এ মন্তব্য করেন। ফখরুলের দাবি, সজীব ওয়াজেদের এসব কথা পুরো নির্বাচনকেই প্রভাবিত করবে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল আজ বেলা তিনটায় গুলশানে খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করেন। বৈঠক শেষে মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা জ্যোতিষবিদ্যায় পারদর্শী হয়ে উঠছেন। একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগেও তিনি এমন একটি জরিপ নিয়ে হাজির হয়েছিলেন। এবারও নির্বাচনের দুই দিন আগে এমন জরিপের ফলাফল প্রকাশ হলো।

ফখরুল অভিযোগ করেন, নির্বাচনকে প্রভাবিত করতেই জয় এসব কথা বলছেন। এর মাধ্যমে নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের চাপে ফেলা হচ্ছে।
বৈঠকের বিষয়ে ফখরুল বলেন, ভোটের আগে শেষ মুহূর্তের পরিস্থিতি জানতে মেয়র প্রার্থীর সঙ্গে সরাসরি কথা বলেছেন। ভোটের পুরো বিষয়টি বিশ্লেষণ করেছেন। ভোটাররা যেন কেন্দ্রে না যায়, এটাই সরকারের চাওয়া। সরকার এ জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা ইতিমধ্যে করে নিয়েছে। একের পর এক নিয়ম লঙ্ঘন করে তারা ভয়ের পরিবেশ তৈরি করেছে। বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ অনুমতি ছাড়াই এত বড় একটা সমাবেশ করল। নির্বাচন কমিশনার শুধু বললেন, তাদের সভা করা উচিত হয়নি, কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নিলেন না।

তবে ফখরুল আশা করেন, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। ভোটাররা কেন্দ্রে গিয়ে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন। আর জনগণ ভোট দিতে পারলে তাবিথ আউয়াল বিপুল ভোটে জয়ী হবেন।
এ সময় তাবিথ আউয়াল বলেন, আওয়ামী লীগের নেতারা প্রকাশ্যে বলেছেন, কেন্দ্রের আশপাশ তাঁরা পাহারা দেবেন। কেন্দ্র দখলে রাখবেন। এর মাধ্যমে ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে। বিএনপির এই মেয়র প্রার্থী আশা করেন, ভোটাররা সব ভয়ভীতি উপেক্ষা করে নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

এরপর বিকেল সোয়া চারটায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেনের গোপীবাগের বাসায় যান মির্জা ফখরুল। সেখানে সজীব ওয়াজেদের জরিপের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সাধারণত যাঁরা জ্যোতিষী, তাঁরা ভবিষ্যদ্বাণী করে থাকেন। আজকে তিনি সেভাবে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, আমার মনে হয় প্রধানমন্ত্রী চিন্তা করা উচিত তাঁকে তাঁর উপদেষ্টা হিসেবে রাখবেন নাকি রাজ জ্যোতিষী হিসেবে নতুন নিয়োগ দেবেন। তিনি যেভাবে ভবিষ্যদ্বাণী করছেন, এটা গোটা নির্বাচনকে প্রভাবিত করছে। যখন সরকারি দলের বড় নেতা বা বড় কর্মকর্তা স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে কথা বলেন, তখন সুনির্দিষ্টভাবে এটা নির্বাচনী ব্যবস্থার ওপর প্রভাব পড়ে। নির্বাচন কমিশন যাঁরা ভোট গ্রহণ করবেন, তাঁদের ওপরও এর প্রভাব পড়ে।’

নির্বাচনের আগের দিনের পরিস্থিতি সম্পর্কে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা সকাল পর্যন্ত যা দেখেছি, সরকারি কর্মকর্তাদের যে কথা শুনেছি, সরকারি দলের নেতারা যেসব কথা বলছেন, তাতে করে খুবই স্পষ্ট যে সরকার চেষ্টা করছে পুরো নির্বাচনকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেওয়ার জন্য।’

এ সময় বিএনপির মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন বলেন, ভোটকেন্দ্র দখল হলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিহত করা হবে।