হুমকিতে ৬৪ প্রজাতির মাছ

জাতীয় সংসদ ভবন। ফাইল ছবি
জাতীয় সংসদ ভবন। ফাইল ছবি

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান জানিয়েছেন, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের (আইইউসিএন) হিসাব অনুযায়ী, দেশে স্বাদু পানির ৬৪ প্রজাতির মাছ হুমকির মধ্যে। এর মধ্যে ৯টি প্রজাতি অতি বিপন্ন, ৩০টি বিপন্ন এবং ২৫টি প্রজাতি শঙ্কাগ্রস্ত শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত।

আজ সোমবার জাতীয় সংসদে সরকারি দলের সাংসদ মনজুর হোসেনের প্রশ্নের জবাবে আশরাফ আলী খান এ কথা জানান। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকের শুরুতে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়।

প্রতিমন্ত্রী জানান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলার ৭২৫ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে অবস্থিত কাপ্তাই লেকে প্রায় ১৩ প্রজাতির মাছ বিলুপ্তির পথে। অবাধ প্রজনন ও বিলুপ্তির পথে মাছ রক্ষার জন্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়াধীন বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন কাপ্তাই লেকে ৭টি অভয়াশ্রম ও ৬টি ভাসমান মোবাইল মনিটরিং সেন্টার স্থাপন করেছে। এসব অভয়াশ্রম থেকে মাছ আহরণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ভাসমান মোবাইল মনিটরিং সেন্টারের মাধ্যমে অভয়াশ্রমগুলোর পাহারা নিশ্চিত করা হচ্ছে। এতে কাপ্তাই লেকে বিলুপ্তপ্রায় মৎস্য প্রজাতি রক্ষার পাশাপাশি মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সরকারি দলের সাংসদ মোরশেদ আলমের প্রশ্নের জবাবে আশরাফ আলী খান জানান, বিলুপ্ত প্রজাতির মাছ সংরক্ষণে দেশের বিভিন্ন নদ-নদী ও অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে স্থাপিত ৪৩২টি অভয়াশ্রম সুফলভোগীদের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হচ্ছে।

৮৮ হাজার পদ সৃজনে সম্মতি

গত বছর সরকারি চাকরিতে ৮৮ হাজারের বেশি নতুন পদ সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে সরকারি দলের সাংসদ বেনজির আহমেদের প্রশ্নের জবাবে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানান, জানুয়ারি থেকে ৩০ ডিসেম্বর ২০১৯ পর্যন্ত সময়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ এবং দপ্তরে ৮৮ হাজার ১২৩টি পদ সৃষ্টিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্মতি দিয়েছে। এ সময়ে ৯ম হতে ২০তম গ্রেডে ৮৪৬টি পদে নিয়োগের ছাড়পত্র প্রদান করা হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী জানান, বর্তমানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় শূন্য পদের সংখ্যা তিন লাখ ২৫ হাজার ৮২টি। মন্ত্রী জানান, আদালতে মামলা থাকা, নিয়োগবিধি কার্যক্রম শেষ না হওয়া এবং পদোন্নতি যোগ্য প্রার্থী না পাওয়ায় কিছু শূন্য পদ যথাসময়ে পূরণ করা যায় না।

সরকারি যানবাহন চালনায় খরচ ১১১ কোটি টাকা
সরকারি দলের সাংসদ নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানান, গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সরকারি যানবাহন চালনা বাবদ ১১১ কোটি ২৩ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। নির্ধারিত সিলিংয়ের মধ্যে জ্বালানি ব্যয় সীমাবদ্ধ রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মাঠপর্যায়ে কাজ পরিদর্শনে সরকারি যানবাহনের পরিবর্তে গণপরিবহন ব্যবহারের জন্য সরকারি কর্মচারীদের উৎসাহিত করা হচ্ছে।

বিচারাধীন মামলা ৫ লাখ ৭৩ হাজার
সরকারি দলের সাংসদ এনামুল হকের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানান, ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৫ বছরের বেশি সময় ধরে অনিষ্পন্ন বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ৫ লাখ ৭৩ হাজার ১৭৮টি। এর মধ্যে ফৌজদারি মামলার সংখ্যা ২ লাখ ২১ হাজার ১০৮টি এবং দেওয়ানি মামলার সংখ্যা ৩ লাখ ৫২ হাজার ৭০টি। ২০১৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে ৬৫ লাখ ৪৭ হাজার ৪৪০ টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে।

বিএনপির সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী জানান, বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির (এডিআর) মাধ্যমে ২৮ হাজার ৯৫৫ টি মামলা নিষ্পত্তি করা হয়েছে।


সরকারি দলের সাংসদ এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, আদালতে জামিন জালিয়াতি বন্ধে প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্তকরণসহ ফৌজদারি আইনে বিচারের সম্মুখীন করার পাশাপাশি ক্ষেত্র বিশেষ বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এ ধরনের জালিয়াতি বন্ধে সরকার বদ্ধপরিকর।


মন্ত্রী বলেন, জামিন জালিয়াতির বিষয়ে উচ্চ আদালত থেকে পূর্বসতর্কীকরণ ব্যবস্থা নেওয়া, জামিন প্রদানকারী সংশ্লিষ্ট আদালতের কর্মকর্তার সঙ্গে কারাগার কর্তৃপক্ষ যোগাযোগপূর্বক জামিন আদেশের সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়াসহ বিভিন্ন রূপ কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ে থাকে। এ ছাড়া সুপ্রিম কোর্টে অনলাইন বেইল কনফারমেশন সফটওয়্যার সিস্টেম চালু রয়েছে, যার মাধ্যমে অধস্তন আদালত উচ্চ আদালত কর্তৃক প্রদত্ত জামিনের সত্যতা যাচাই করে নিশ্চিত হতে পারছে।