স্কুলটিতে গ্যাস ও পানির তোড়ে ভেঙে গেছে সীমানা প্রাচীর

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় শেরে বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে গভীর নলকূপের পাইপ দিয়ে দ্রুত গতিতে বের হওয়া গ্যাস ও পানির তোড়ে বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর ভেঙে গেছে। বিদ্যালয়ের একটি ভবন দেবে গেছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে আশপাশের লোকজনের রান্নাবান্না। বাপেক্স কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে।

উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের শেরে বাংলা উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে একটি গভীর নলকূপ বসানোর কাজ চলছে। গত বুধবার সকাল থেকে হঠাৎ করে নলকূপের পাইপ দিয়ে দ্রুত গতিতে গ্যাস বের হতে শুরু করে। গ্যাসের সঙ্গে বালু ও পানি বের হয়ে আসছে। এই স্কুলের দুই কিলোমিটার দূরে সালদা গ্যাসক্ষেত্র। এরই মধ্যে স্কুলের শহীদ মিনারটিও ধসে পড়েছে।

আজ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌল্লা খান, বাপেক্সের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মো. আলমগীর হোসেন, কসবা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রাশেদুল কাউছার ভূঁইয়া, কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুদ উল আলম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন।

বাপেক্সের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মো. আলমগীর হোসেন বলেন, আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করতে হবে। যেহেতু এটি গ্যাসের বিষয় তাই সাবধান থাকতে হবে। বিড়ি-সিগারেটসহ যেকোনো কিছু থেকে আগুন লেগে গেলে ভয়াবহ ক্ষতি হতে পারে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌল্লা খান বলেন, বাপেক্সের প্রকৌশলীসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে। তারা জানিয়েছেন দুই-এক দিনের মধ্যে এই নির্গমন বন্ধ হতে পারে। তিনি বলেন, দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। এলাকাটির আশপাশে কোনো ধরনের আগুন না ধরানোর জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।

কসবা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদুল কাওসার ভূঁইয়া বলেন, আগুন যাতে না ধরে সে জন্য আশপাশের বাড়িগুলোতে রান্নাবান্না বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে তাদের শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রবল গতিতে বের হওয়া গ্যাস, পানি আর বালু পুকুরে গিয়ে পড়ছে। এতে পুকুরের মাছও মরে যাচ্ছে।

কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুদ উল আলম বলেন, বাপেক্সের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা জানিয়েছেন যেহেতু ৫৪০ ফুট গভীর করা হয়েছে, তাই সেই গভীরতা পর্যন্ত গ্যাস শেষ না হওয়া পর্যন্ত গ্যাস বের হতে থাকবে।

সালদা গ্যাস ক্ষেত্রের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. মহি উদ্দিন বলেছেন, গ্যাস ও পানির নির্গমন বন্ধ করার কোনো যন্ত্রপাতি তাদের কাছে নেই। তারা শুধু গ্যাস উৎপন্ন করতে পারেন। বিষয়টি দেখবে বাপেক্স বা পেট্রোবাংলা।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বায়েক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আল-মামুন ভূঁইয়া বলেন, এরই মধ্যে বিদ্যালয়ের শহীদ মিনার ও একটি সীমানা প্রাচীর ভেঙে গেছে। উপড়ে গেছে দুটি গাছ। একটি ভবনের অর্ধেক মাটিতে দেবে গেছে। বিদ্যালয়টি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে। বিদ্যালয়ের অন্য ভবনটিও ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।