র্যাগিংয়ের দায়ে ৩ শিক্ষার্থী সাময়িক বহিষ্কার

র‌্যাগিংয়ের দায়ে ত্রিশালের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির সভায় আজ রোববার বিকেলে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সাময়িক বহিষ্কার হওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তোয়াবা নুসরাত ও শায়েরা তাসনিম এবং চারুকলা বিভাগের মৌমিতা পারভীন।

গত মঙ্গলবার রাতে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস–সংলগ্ন এলাকার একটি ছাত্রী মেসে নাট্যকলা বিভাগের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীকে র‌্যাগিং করা হয়। একপর্যায়ে ওই ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে প্রথমে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে সে রাতেই তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

একই রাতে আরেকটি ছাত্র মেসে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রকে র‌্যাগিং করা হলে ওই ছাত্রও অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকেও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

একাধিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী জানান, গত মঙ্গলবার প্রথম বর্ষের নাট্যকলা ও পরিবেশনাবিদ্যা বিভাগের প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রীকে ছাত্রী মেসের দ্বিতীয়তলার সিঁড়িঘরে নিয়ে র‌্যাগিংয়ের নামে নানা আপত্তিকর ঘটনা ঘটান ওই মেসে থাকা একই বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ ছাত্রীরা। সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত কয়েক দফা তাঁকে নির্যাতন করা হয়। একপর্যায়ে সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় অসুস্থ হয়ে পড়ে যায় ছাত্রীটি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ৩ ফেব্রুয়ারি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হওয়ার পর থেকে নতুন শিক্ষার্থীরা নানাভাবে র‌্যাগিংয়ের শিকার হচ্ছেন। কখনো কখনো এ র‌্যাগিং শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের পর্যায়ে পৌঁছায় বলে অভিযোগ করেছেন কয়েকজন ছাত্রছাত্রী।

র‌্যাগিংয়ের প্রতিবাদে আজ ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর উজ্জ্বল কুমার ধর প্রথম আলোকে বলেন, অসুস্থ ছাত্রীর সঙ্গে কথা বলে তিন ছাত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে জরুরি সিন্ডিকেট সভা ডাকা হবে। সেই সভায় বহিষ্কৃত ছাত্রীদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এ ছাড়া র‌্যাগিংয়ের শিকার ছাত্রীটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমানের নির্দেশে দোলনচাঁপা ছাত্রী হোস্টেলে থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। অসুস্থ ছাত্রীটির যাবতীয় চিকিৎসার ব্যয়ভার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বহন করবে। র‌্যাগিংয়ের শিকার অপর আহত ছাত্রকে তাঁর পরিবার ঢাকায় নিয়ে গেছে। তাঁর শারীরিক অবস্থার নিয়মিত খোঁজ রাখছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সামনের সিন্ডিকেট সভায় এই বিষয়েও জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রক্টর।