কারারক্ষীর ইউনিফর্ম ছিঁড়লেন আ.লীগ নেতা দিদারুল

ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

তল্লাশি চালানোয় ক্ষিপ্ত হয়ে এক কারারক্ষীকে মারধর ও পোশাক (ইউনিফর্ম) ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে আওয়ামী লীগ নেতা দিদারুল আলম ওরফে মাসুমের বিরুদ্ধে। গত ১৩ জানুয়ারি সকালে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে এ ঘটনা ঘটে। সম্প্রতি বিষয়টি জানাজানি হয়। ঘটনার পর কারা কর্তৃপক্ষ কারাবিধি অনুযায়ী দিদারুলের সঙ্গে স্বজনদের সাক্ষাৎ দশ দিন বন্ধ রেখেছিল।

কারা সূত্র জানায়, শুধু তল্লাশি নয়, নানা অবৈধ সুবিধা নিতে কারা কর্তৃপক্ষকে বাধ্য করার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। বাসা থেকে খাবার এনে খাওয়া, প্রতিদিন স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাইতেন দিদারুল।

ছাত্রলীগ নেতা সুদীপ্ত বিশ্বাস হত্যা মামলায় গত ২৯ জানুয়ারি কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান তিনি। গত বছরের ১৩ নভেম্বর আত্মসমর্পণ করলে আদালত দিদারুলকে কারাগারে পাঠান। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) মামলাটি তদন্ত করছে।

কারা সূত্র জানায়, দিদারুল কারাগারে থাকার সময়ে কারা হাসপাতালে ছিলেন। ১৩ জানুয়ারি সকাল সাড়ে আটটার দিকে জেলার রাঙ্গুনিয়ার থানার হত্যা মামলার আসামি মো. মিজান ও খুলশী থানার অস্ত্র মামলার আসামি আল আমিন হাসপাতালে দিদারুলের সঙ্গে দেখা করেন। ওই সময় দায়িত্বরত কারারক্ষী মো. মামুন ওই দুজনকে তল্লাশি করে দুজনের কাছে আট শ টাকা পান। তখন তাঁরা জানান, টাকাগুলো দিদারুলই তাঁদের দিয়েছেন। তখন দিদারুলের কাছে আরও টাকা আছে কি না, কারারক্ষী মামুন তল্লাশি করতে চাইলে উল্টো কারারক্ষীর প্যান্টের পকেট তল্লাশি করে টাকাগুলো ছিনিয়ে নেন দিদারুল। একপর্যায়ে প্যান্টের পকেট ছিঁড়ে ফেলেন। কারারক্ষী মামুনকে মারধর করেন। এক কারারক্ষী এসে মামুনকে রক্ষা করেন।

বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে চট্টগ্রাম কারাগারের জ্যেষ্ঠ তত্ত্বাবধায়ক মো. কামাল হোসেনকে জানানো হয়। তিনি কারণ জানতে চাইলে তার ওপরও ক্ষিপ্ত হন দিদারুল। পরদিন কারাগারে ‘কেস টেবিলে’ বিষয়টি উত্থাপন করা হলে কারাবিধি অনুযায়ী শাস্তিস্বরূপ দিদারুলের সাক্ষাৎ দশ দিনের জন্য বন্ধ রাখা হয়।

উল্লেখ্য, কারাবিধি অনুযায়ী কোনো বন্দী নগদ টাকা সঙ্গে রাখতে পারেন না।

অভিযোগ অস্বীকার করে গতকাল মঙ্গলবার মুঠোফোনে দিদারুল আলম মাসুম প্রথম আলোকে বলেন, ‘সামান্য ভুল-বোঝাবুঝি। কারারক্ষী টাকা কেড়ে নেওয়ায় প্রতিবাদ করেছিলাম।’ কারাগারে বিভিন্ন অবৈধ সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমি হার্টের রোগী। তাই বাসা থেকে বিস্কুট এনে খেতাম। এটিও পরে বন্ধ করে দেয়।’

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ তত্ত্বাবধায়ক মো. কামাল হোসেন তাঁর কার্যালয়ে প্রথম আলোকে বলেন, কারারক্ষীর সঙ্গে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় বন্দী দিদারুলের বিরুদ্ধে কারাবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।