বিদ্যুৎ না থাকায় বিজিএমইএ ভবন ভাঙার কাজে ঢিলেমি

বিজিএমইএ ভবন । প্রথম আলো ফাইল ছবি
বিজিএমইএ ভবন । প্রথম আলো ফাইল ছবি

বিজিএমইএর কাছে প্রায় তিন লাখ টাকার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া পাওনা থাকায় হাতিরঝিলের বিজিএমইএ ভবনে বিদ্যুৎ–সংযোগ দিচ্ছে না ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি (ডিপিডিসি)। এতে ভবন ভাঙার কাজে সমস্যা হচ্ছে। এখন জেনারেটর দিয়ে ভবনের কাচ ও টাইলস ভাঙার যন্ত্র 

চালানো হচ্ছে।

ঠিকাদার কোম্পানি ফোরস্টার এন্টারপ্রাইজ বলছে, শিগগিরই সংযোগ দেওয়া না হলে তারা কাজ ছেড়ে চলে যাবে। কারণ, প্রতিদিন বড় অঙ্কের টাকা খরচ হচ্ছে। বিজিএমইএ ভবন ভাঙার কাজের উদ্বোধন হয় গত ২২ জানুয়ারি। এর এক সপ্তাহের মধ্যে পুরোদমে ভাঙার কাজে শুরু হওয়ার কথা। বিদ্যুৎ–সংযোগ না থাকায় কাজ চলছে অপেক্ষাকৃত ধীরে।

জানা গেছে, বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) কাছে ডিপিডিসি ২ লাখ ৯৭ হাজার টাকার বিদ্যুৎ বিল পায়। ওই টাকার জন্য বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয় আগেই। বর্তমানে ভবনটি ভাঙার জন্য ডিপিডিসির কাছে বিদ্যুৎ–সংযোগ চাইতে গিয়ে ঠিকাদার কোম্পানি জানতে পারে যে এই বকেয়া পরিশোধ না করলে পুনঃ সংযোগ দেওয়া হবে না।

জানতে চাইলে ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান গতকাল শুক্রবার প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত নন। খবর নিয়ে পরে কী করা যায়, তা দেখবেন।

ফোর স্টার এন্টারপ্রাইজের পরিচালক নসরুল্লাহ খান বলেন, বিদ্যুৎ–সংযোগ না পাওয়ায় জেনারেটর চালিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। এতে প্রতিদিন ২০ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ–সংযোগ পাওয়ার সম্ভাবনার কথা জানা গিয়েছিল, কিন্তু তা হয়নি। আগামী সোমবারের মধ্যে সংযোগ দেওয়া না হলে সংবাদ সম্মেলন করে তাঁদের সমস্যার বিষয় প্রকাশ করবেন। প্রয়োজনে কাজ ছেড়ে দেবেন। তিনি বলেন, ভাঙার কাজে প্রতি মুহূর্তে বিদ্যুতের প্রয়োজন। তারপরও জেনারেটর চালিয়ে ইতিমধ্যে অনেক কাজ শেষ করা হয়েছে।

বিদ্যুৎ বকেয়ার বিষয় জানতে বিজিএমইএর সভাপতি রুবানা হকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে জানা গেছে, তিনি দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। বিজিএমইএর সহসভাপতি ফয়সল সামাদের মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাঠিয়ে বারবার ফোন করলেও তিনি ধরেননি।

যোগাযোগ করা হলে রাজউক বোর্ড সদস্য (উন্নয়ন) ও ভাঙার কাজের তত্ত্বাবধায়ক কমিটির আহ্বায়ক সামসুদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, বকেয়ার কারণে বিদ্যুৎ–সংযোগ না পাওয়ার বিষয়টি তাঁরা জেনেছেন। কিন্তু এ জন্য কাজ বন্ধ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। বিজিএমইএ টাকাটা না দিলে রাজউকের পক্ষ থেকে ব্যবস্থার কথা চিন্তা করা যেতে পারে। কারণ, ভবনটি ভাঙা বাবদ রাজউক ঠিকাদার কোম্পানির কাছ থেকে টাকা পেয়েছে।

গতকাল দুপুরে কারওয়ান বাজার–সংলগ্ন বিজিএমইএ ভবন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ১৬ তলা ভবনের পূর্ব দিকের দেয়ালের কাচ খোলা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ভবনের পূর্ব দিকের এক প্রান্তে ওপর তলা থেকে তিন তলা পর্যন্ত কাচ খুলে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিটি তলার ভেতরের ভাঙা টাইলস সরিয়ে ফেলা হয়েছে।