নারীকে ছেঁকা দিয়ে ও চুল কেটে নির্যাতন, গ্রেপ্তার ১

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক নারীকে চুল কেটে ও খুন্তি গরম করে শরীরে ছেঁকা দিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত শনিবার রাতে জেলা শহরের কাউতলী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে পুলিশ গিয়ে ওই নারীকে উদ্ধার করে এবং মোস্তাক আহমেদ নামের একজনকে গ্রেপ্তার করে।

পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, মোস্তাকের বিরুদ্ধে হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ ও বিজয়নগর থানায় হত্যা, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, অস্ত্রসহ ১৬টি মামলা রয়েছে।

গ্রেপ্তার মোস্তাকের বাড়ি হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার ধর্মনগর ইউনিয়নের নিজনগর গ্রামে। তবে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের কাউতলী এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকেন।

পুলিশ ও নির্যাতনের শিকার ওই নারীর সূত্রে জানা গেছে, মোস্তাক জেলা শহরের কাউতলী এলাকায় বিয়ে করে সেখানেই একটি ভাড়া বাসায় স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন। নির্যাতনের শিকার ওই নারী তাঁর পূর্বপরিচিত। বিজয়নগর উপজেলার একটি গ্রামে ওই নারীর স্বামীর বাড়ি। ২০১৮ সালের ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্র্যাকের হেলথ প্রোগ্রামের স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে ওই নারী কাজ করেছেন। তখন সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশা উদ্ধারের ঘটনার সূত্র ধরে মোস্তাকের সঙ্গে ওই নারীর পরিচয় হয়। শনিবার ওই নারী ঢাকা থেকে স্বামীর বাড়িতে ফিরছিলেন। মোস্তাক মুঠোফোনে যোগাযোগ করে তাঁকে আশুগঞ্জ উপজেলার একটি রেস্তোরাঁর সামনে বাস থেকে নামান। পরে ওই নারীকে একটি ব্যক্তিগত গাড়িতে করে তাঁর ভাড়া বাসায় নিয়ে যান। এরপর ওই নারীর কাছে থেকে ‍মুঠোফোন ও সাড়ে ৩ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন। আরও ২০ হাজার টাকা দাবি করেন মোস্তাক। ওই নারী তাঁর এক ভাইয়ের কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা এনে দেন। কিন্তু পরে আরও টাকার জন্য মোস্তাক, তাঁর স্ত্রীসহ চার-পাঁচজন মিলে ওই নারীকে হাত, পা ও মুখ বেঁধে নির্যাতন শুরু করেন। রাতে তাঁরা ওই নারীর দুই হাত, গলা, গাল ও পায়ে খুন্তির ছেঁকা দেন। একপর্যায়ে চুল কেটে দেন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওই নারীকে বাড়ির বাইরে বের করে দেওয়া হয়। এ সময় স্থানীয় এক ব্যক্তি ৯৯৯ নম্বরে কল করে পুলিশকে বিষয়টি জানান। পরে পুলিশ গিয়ে ওই নারীকে উদ্ধার ও মোস্তাককে আটক করে।

সদর থানার উপপরিদর্শক মোতালেব বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ওই নারীর সঙ্গে মোস্তাকের অনৈতিক সম্পর্ক ও অবৈধ ব্যবসা ছিল। 

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন বলেন, মোস্তাকের বিরুদ্ধে হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ ও বিজয়নগর থানায় হত্যা, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, অস্ত্রসহ ১৬টি মামলা রয়েছে।