ভোট নয়, সরকারের প্রয়োজন নিশিরাত ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী: রিজভী

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ফাইল ছবি
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ফাইল ছবি

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে বলেছেন, আওয়ামী লীগের জনগণের ভোটের দরকার হয় না। তাদের প্রয়োজন হয় নিশিরাত আর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। রিজভী নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে বলেছেন, কমিশন এখন সরকারের পুতুল।

আজ সোমবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

গত শনিবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড এবং স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের যৌথসভায় বলেছেন, কে ভোট দিল, কে দিল না, তা বিবেচনা করে না আওয়ামী লীগ।

প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনা প্রকাশ্যেই স্বীকার করে নিলেন, তাঁর প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য কিংবা সরকার গঠনের জন্য দেশের জনগণ কিংবা জনগণের ভোটের প্রয়োজন হয় না। প্রয়োজন হয় নিশিরাত আর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। জনগণের প্রতি, জনগণের ভোটাধিকারের প্রতি এমন অবজ্ঞা ও তাচ্ছিল্যপূর্ণ মন্তব্য একমাত্র সরকারপ্রধান এবং তাঁর দল আওয়ামী লীগের পক্ষেই সম্ভব।’

নির্বাচন কমিশন সরকারের পুতুলে পরিণত হয়েছে জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ইভিএম আমদানি করতে রাষ্ট্রের খরচ হয়েছে শত শত কোটি টাকা। ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রমাণিত হয়েছে, ইভিএম হচ্ছে ভোট চুরির শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ ও ঝামেলামুক্ত যন্ত্র। কিন্তু এই মেশিনের পক্ষে সাফাই গেয়ে চলছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। কারণ, তাদের ভোটের দরকার নেই। তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশনের উচিত ছিল কমিশনের প্রতি, নির্বাচনী ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস ফিরিয়ে আনা।

সিটি নির্বাচনে প্রার্থীরা ভোটারের কাছে না গিয়ে রাস্তায় শোডাউন করেছে এবং সে কারণেই ভোটার উপস্থিতি কম হয়েছে—প্রধান নির্বাচন কমিশনারের এ বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের শান্তিপূর্ণ শোডাউন ভোটের প্রচার কার্যক্রমেরই অংশ। ভোটাররা শোডাউনে অংশ নেন, কিন্তু ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে যান না, এর দায় নির্বাচন কমিশনের। তিনি আরও বলেন, খারাপ মানুষ যাতে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হতে না পারেন, এ জন্য নির্বাচন কমিশনের সময়োপযোগী আইন ও বিধি তৈরি করা উচিত এবং নির্বাচনের এমন পরিবেশ নিশ্চিত করা উচিত যেন জনগণ তাঁর পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন।

মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বিএনপির কর্মসূচি ঘোষণা করেন রিজভী। আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি বেলা দুইটায় সুপ্রিম কোর্ট বার অডিটোরিয়ামে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল ছয়টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ এবং কালো পতাকা উত্তোলন। সকাল ছয়টায় বলাকা সিনেমা হলের সামনে থেকে আজিমপুর কবরস্থানে ভাষাশহীদদের মাজার জিয়ারত শেষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার অভিমুখে যাত্রা এবং শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন। এ ছাড়া সারা দেশেও দলের নেতা–কর্মীরা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন এবং আলোচনা সভার আয়োজন করবেন।