নারীর ওপর উঠে গেল ভেকু মেশিন

ভেকু মেশিনের ধাক্কায় ভেঙে গেছে চারটি রিকশা। ছবি: প্রথম আলো
ভেকু মেশিনের ধাক্কায় ভেঙে গেছে চারটি রিকশা। ছবি: প্রথম আলো

কুমিল্লায় নির্মাণাধীন রেললাইনে দাঁড়িয়ে সবজি কেনার সময় ভেকু মেশিনের ধাক্কায় এক নারী নিহত হয়েছেন। আহত হন পাঁচজন। মেশিনের ধাক্কায় চায়ের একটি টং দোকান গুঁড়িয়ে গেছে এবং চারটি রিকশা ভেঙে গেছে। ভেকুর চালককে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করেছে লোকজন।

আজ বুধবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে কুমিল্লা নগরের অশোকতলা রেলগেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত নারীর নাম সহিদা বেগম (৬৫)। তিনি নগরের অশোকতলা এলাকার খোরশেদ মিয়ার স্ত্রী। আহত ব্যক্তিরা হলেন অশোকতলা এলাকার চা–দোকানি নাসির উদ্দিন (৭০), তাঁর স্ত্রী ফাতেমা বেগম (৬০), বাকি মিয়া (৪২), আবদুর রহিম (৪০) ও দৌলতপুর ছায়াবিতান এলাকার হাবিবুর রহমান (৫৫)।

লাকসাম-আখাউড়া ডাবল লাইন নির্মাণকাজে ভেকু মেশিনটি ব্যবহৃত হচ্ছিল। মেশিনটি জব্দ করেছে পুলিশ।

দুর্ঘটনার তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লার কান্দিরপাড় পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) নুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ভেকু মেশিনের ধাক্কায় হতাহত হওয়ার এই ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে। ভেকু মেশিনটি জব্দ করা হয়েছে।

ভেকু মেশিনের ধাক্কায় নিহত নারীর স্বজনদের আহাজারি। ছবি: প্রথম আলো
ভেকু মেশিনের ধাক্কায় নিহত নারীর স্বজনদের আহাজারি। ছবি: প্রথম আলো

প্রত্যক্ষদর্শী কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার ধামতী গ্রামের জাকির হোসেনের ভাষ্য, ঢাকা-চট্টগ্রাম রেললাইনে লাকসাম-আখাউড়া ডাবল রেললাইনের নির্মাণকাজ চলছিল। আজ সকাল সাড়ে নয়টার দিকে কুমিল্লার অশোকতলা রেলক্রসিং পার হওয়ার সময় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্সের ভেকু মেশিন চালিয়ে যাচ্ছিলেন অপারেটর (চালক) সামির হোসেন। ওই সময় নির্মাণাধীন রেললাইনের মধ্যে ভ্যান নিয়ে সবজি বিক্রি করছিলেন এক ব্যক্তি। তখন সহিদা বেগম সেখানে দাঁড়িয়ে ভ্যান গাড়ি থেকে সবজি কিনছিলেন। হঠাৎ ভেকু মেশিনের চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে মেশিনটি গিয়ে ভ্যানের ওপর পড়ে। ওই সময় মেশিনের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই সহিদা বেগম নিহত হন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মেশিনের ধাক্কায় পাশের একটি চায়ের টং দোকার গুঁড়িয়ে যায়। চারটি রিকশা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আশপাশের লোকজন এসে চালক সামিরকে ধরে মারধর করে। পরে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।

সরেজমিন দেখা গেছে, চায়ের দোকানটি ভেঙে গেছে। চারটি রিকশাও ভেঙে গেছে। সবজির ভ্যান গুঁড়িয়ে গেছে। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থেঁতলানো অবস্থায় পড়ে রয়েছে সবজি। লোকজন সেখানে ভিড় করেছে।

ম্যাক্স কোম্পানির আরেক অপারেটর কামাল হোসেন বলেন, ‘ভেকু মেশিন নিয়ে যাওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা লেগে এই ঘটনা ঘটে। বিষয়টি কোম্পানির বড় স্যারদের জানানো হয়েছে।’

এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে নিহত সহিদা বেগমের ছেলে জীবন মিয়া বলেন, ‘আমি আমার মা হত্যার বিচার চাই।’