রোগপ্রতিরোধী শর্ষে চাষ

নড়াইলের লোহাগড়ার লংকারচর গ্রামে এ বছর চাষ হয়েছে বারি সরিষা-১৪।  প্রথম আলো
নড়াইলের লোহাগড়ার লংকারচর গ্রামে এ বছর চাষ হয়েছে বারি সরিষা-১৪। প্রথম আলো

স্থানীয় জাতের চেয়ে আবাদে খরচ কম, অথচ ফলন দ্বিগুণ। এ ছাড়া রোগ ও পোকা প্রতিরোধক। এ রকম ‘বারি সরিষা-১৪’ জাতের শর্ষের চাষ এ বছর শুরু হয়েছে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায়। এখন চলছে কর্তন মৌসুম।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএআরআই) ডাল ও তৈলবীজ গবেষণা সম্প্রসারণ জোরদারকরণ প্রকল্পের অর্থায়নে এ উপজেলার ইতনা ইউনিয়নের লংকারচর গ্রামে টানা প্রায় ২০ একর জমিতে এ শর্ষের চাষ হয়েছে। এ ছাড়া উপজেলা কৃষি বিভাগের তত্ত্বাবধানে রাজস্ব অর্থায়নে ৪০টি প্রদর্শনী প্লটে চাষ হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার লংকারচর গ্রামে হলো এ ফসলের ওপর মাঠ দিবস। প্রায় দেড় শ কৃষক মাঠ দিবসে উপস্থিত ছিলেন। মাঠ দিবসের আয়োজন করে যশোর আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের সরেজমিন গবেষণা বিভাগ। স্থানীয় ইতনা ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শিকদার ইমরানুর রহমানের উদ্যোগে এ মাঠ দিবস হয়।

এতে সভাপতিত্ব করেন যশোর আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা গোবিন্দ চন্দ্র বিশ্বাস। প্রধান অতিথি ছিলেন বিএআরআইয়ের তৈলবীজ গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক দিল আফরোজ খানম। বিশেষ অতিথি ছিলেন তৈলবীজ গবেষণা কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক মো. আবদুল লতিফ আকন্দ, যশোর আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কাওছার উদ্দিন আহাম্মদ।

যশোর আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো হাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন নড়াইল জেলা কৃষি বিভাগের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা অনুজ কুমার বিশ্বাস, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সমরেন বিশ্বাস, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারহানা ইয়াসমিন, ইতনা স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী অধ্যাপক অনিন্দ্য সরকার, ইতনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ ইমদাদুল হক, কৃষক অনুকূল সরকার, শৈলেন্দ্রনাথ সরকার ও সাকিব লস্কর প্রমুখ।

কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, স্থানীয় জাতের শর্ষের পটে যেখানে দানা থাকে ৮-১০টি, সেখানে এ শর্ষের পটে দানা হয় ২৮-৪০টি। এ জাতের শর্ষের ফলন হয় একরে ২৩-২৪ মণ, সেখানে স্থানীয় জাতের শর্ষের ফলন ১২-১৩ মণ। তেলের পরিমাণও বেশি। শর্ষের ওজনের ৪৬-৪৮ ভাগ তেল হয়, অর্থাৎ শর্ষের ওজনের প্রায় অর্ধেক তেল হয়। হলুদ বর্ণের এ শর্ষেগাছ ৩০-৩৫ ইঞ্চি লম্বা হয়। এর চাষে ৮০ থেকে ৮৫ দিন সময় লাগে। আমন কাটার পর বোরো আবাদের আগে কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাসে এর চাষ হয়। বিএডিসিতে বা স্থানীয় কৃষি বিভাগে এর বীজ পাওয়া যাবে।