ক্ষমতায় গেলে পিলখানা হত্যার সুষ্ঠু বিচার: মির্জা ফখরুল

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ১১ বছর পূর্তিতে নিহত সেনা কর্মকর্তাদের প্রতি বনানী সামরিক কবরস্থানে শ্রদ্ধা জানায় বিএনপি। ছবি: সংগৃহীত
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ১১ বছর পূর্তিতে নিহত সেনা কর্মকর্তাদের প্রতি বনানী সামরিক কবরস্থানে শ্রদ্ধা জানায় বিএনপি। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের নিরপেক্ষ তদন্ত করে সুষ্ঠু বিচারের উদ্যোগ নেবেন বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তাঁর মতে, পিলখানা হত্যাকাণ্ডে সুষ্ঠু বিচার হয়নি।

আজ মঙ্গলবার পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ১১ বছর পূর্তিতে নিহত সেনা কর্মকর্তাদের প্রতি রাজধানীর বনানীতে সামরিক কবরস্থানে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিডিআর হত্যাকাণ্ডে যাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে, তারা বলেছে, এই বিচার সুষ্ঠু হয়নি। এই ঘটনার জন্য সেনাবাহিনী থেকে ওই সময়ে যে তদন্ত কমিটি করা হয়েছিল, তার পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়নি। আমরাও মনে করি এই বিচার সুষ্ঠু হয়নি।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা ক্ষমতা যাওয়ার সুযোগ পেলে অবশ্যই এর নিরপেক্ষ তদন্ত করে সুষ্ঠু বিচারের উদ্যোগ নেব।’

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে ষড়যন্ত্রমূলক উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতীক সেনাবাহিনীর মনোবলকে ভেঙে দিতেই এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। আজ আমাদের স্বাধীনতা বিপন্ন, গণতন্ত্র নেই। গণতন্ত্রের আপসহীন নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে।’

শ্রদ্ধা নিবেদনে আরও উপস্থিত ছিলেন কল্যাণ পার্টির প্রধান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, বিমানবাহিনীর প্রধান (অব.) এয়ার ভাইস মার্শাল আলতাফ হোসেন চৌধুরী, মেজর জেনারেল (অব.) রুহুল আলম চৌধুরী, মেজর জেনারেল (অব.) ফজলে এলাহী আকবর, কর্নেল (অব.) মো. শাহজাহান, মেজর (অব.) মিজানুর রহমান, মেজর (অব.) সারোয়ার হোসেন, মেজর (অব.) কোহিনুর হোসেন নূর, শামীমুর রহমান শামীমুর, শায়রুল কবির খান প্রমুখ।

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি বিদ্রোহের নামে পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরে ঘটেছিল এক নারকীয় হত্যাকাণ্ড। এ ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন প্রাণ হারান। বিচারের মুখোমুখি করা হয় ৮৪৬ বিডিআর জওয়ানকে। মামলার অন্য চার আসামি বিচার চলাকালে মারা যান।

২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর এ মামলায় ১৫২ জনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুর আদেশ দেন বিচারিক আদালত। তাঁদের একজন ছাড়া সবাই তৎকালীন বিডিআরের সদস্য। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় ১৬১ জনকে। সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা পান আরও ২৫৬ জন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাস পান ২৭৮ জন আসামি। সাজা হয় মোট ৫৬৮ জনের।

২০১৭ সালের ২৬ ও ২৭ নভেম্বর দেওয়া রায়ে ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন হাইকোর্ট। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় ১৮৫ জনকে। আর ২০০ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। খালাস পান ৪৫ জন।

হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চের বিচারপতিরা পিলখানা হত্যা মামলায় ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন, ১৮৫ জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও অন্যদের বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ড ও সাজা বহালের সিদ্ধান্তে একমত পোষণ করে গত মাসে রায় দেন। এখন আপিল বিভাগে আপিল করার পালা।