আমাকে ফাঁসাতে ষড়যন্ত্র হচ্ছে: শাবনূর

শাবনূর
শাবনূর
>

পিবিআইয়ের তদন্তে এসেছে জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছেন। আত্মহত্যার অন্যতম কারণ চিত্রনায়িকা শাবনূরের সঙ্গে ‘অতি-অন্তরঙ্গতা’। এ বিষয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন শাবনূর।

‘শুনলাম, ৫ সেপ্টেম্বর রাতে আমি সালমান শাহকে একাধিকবার ফোন করেছি। আমার ওপর রাগ করে ফোন ভেঙে ফেলেছে। আমাকে ঝাড়ি মেরেছে। বলেছে, শাবনূর, তুমি আর ফোন দিবা না। আমার উপহার দেওয়া ফ্যান ভেঙে ফেলে। এত বছর তদন্তের পর এ ধরনের কথার মানে কী!’ গতকাল মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়া থেকে ফোনে প্রথম আলোকে একনাগাড়ে কথাগুলো বললেন শাবনূর। সালমানের মৃত্যুর প্রায় দুই যুগ পর এসব কথা শুনে তিনি রীতিমতো বিরক্ত।

পিবিআইয়ের তদন্তে উঠে এসেছে, জনপ্রিয় নায়ক সালমান খুন হননি, আত্মহত্যা করেছেন। আর আত্মহত্যা করেছেন পাঁচ কারণে। কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো, শাবনূরের সঙ্গে ‘অতি-অন্তরঙ্গতা’।

শাবনূর অবশ্য পিবিআইয়ের সঙ্গে একেবারেই একমত নন। তিনি বলেন, ‘আমি যদি সালমানকে ফোন করে থাকি, নিশ্চয়ই কললিস্ট আছে। কথার রেকর্ডও আছে। তাহলে আমাকে শোনাক। তাহলেই তো সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যায়। সালমানের মা নীলা আন্টি ও স্ত্রী সামিরা সংবাদ সম্মেলন করে বলুক। তাঁদের স্বামী-স্ত্রী কী ঝগড়া হচ্ছে, তা তো আমার জানার কথা না। আমার দেখার বিষয়ও না।’

সালমানের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি ঘুরেফিরে এসেছে। বরাবরের মতো কালও তা অস্বীকার করেছেন দেশের চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় এই অভিনয়শিল্পী। শাবনূর বলেন, ‘সালমানকে যদি আমি পছন্দ করতাম, ভালোবাসতাম, তাকে তো মরতে দিতাম না। তাকে বাঁচিয়ে রাখতাম। সেও নিশ্চয়ই তার পছন্দের লোকের কাছেই চলে আসত। এখন শুনছি একটা কাজের লোক কোথা থেকে এসেছে। সাক্ষী দিয়েছে। এমনও শুনছি, সালমান নাকি দুই স্ত্রী নিয়ে থাকতে চেয়েছিল। আমার বিরুদ্ধে নানা অপবাদ দেওয়া হচ্ছে। আমি বলব, সালমান ও আমার যদি কোনো সম্পর্ক থাকত, তাহলে সামিরার উচিত ছিল, আমাকে বলা। সে বলতে পারত, শাবনূর তুমি এটা করছ কেন? এত বছর তো সে এ ধরনের কথা বলেনি। এখন কেন এ কথা উঠছে?’

তুমি আমার ছবিতে কাজের মধ্য দিয়ে জুটি হিসেবে অভিনয় শুরু সালমান ও শাবনূরের। একসঙ্গে তাঁরা দুজন ১৪টি ছবিতে অভিনয় করেন। তুমি আমার দিয়ে শুরু করলেও বুকের ভেতর আগুন দিয়ে শেষ হয়। শাবনূর বলেন, ‘একসঙ্গে কাজ করেছি, দেখা-সাক্ষাৎ হয়েছে, আড্ডা হয়েছে। ঘোরাঘুরির সময় সামিরাও সঙ্গে থাকত। সালমানও সামিরাকে সব জায়গায় নিয়ে যেত। আমার মাকে বলত, আন্টি, আমার জানটাকে একটু দেখে রাইখেন। ছবিতে কাজ করতে গিয়ে দারুণ বন্ধুত্ব হয়েছে। ভাইবোনের সম্পর্ক ছিল। সালমানের মা নীলা আন্টিও সব সময় এমনটা বলতেন।’

ফ্যান উপহার দেওয়ার বিষয়ে শাবনূর বলেন, ‘সালমান তখন অনেক বড় শিল্পী, অনেক জনপ্রিয়। আমিও কোনো অংশে কম ছিলাম না। এত বড় একজন শিল্পীকে আমি যদি কিছু উপহারও দিই, তাহলে তো বড় ধরনের কিছু দেব। গোল্ডের কিছু কিংবা ব্র্যান্ডের দামি ঘড়ি উপহার দেব। কারণ, সালমান শাহ অনেক বড় একটা ব্যাপার। সবাই যে এখন বলছে, একটা কথাই বলব, শুধু একটা প্রমাণ দিক, আমার সঙ্গে সালমানের সম্পর্ক ছিল? মানুষের কথায় কিংবা কাজের লোকের কথা আমি মানব না।’

শাবনূরের দাবি, ‘মোবাইল ফোনের কথা বলা হচ্ছে, আমরা যত দিন কাজ করেছি, কখনোই সালমানের হাতে ফোন দেখিনি। ডাবিংয়ের সময় নাকি আপত্তিকর অবস্থায় পাওয়া গেছে। যখন কোনো সিনেমার ডাবিং হয়, অনেক লোক ডাবিং ফ্লোরে থাকেন। সেখানে কি আপত্তিকর অবস্থায় দেখা যাবে? এটা তো কোনো কথাই হলো না। একজন সহশিল্পীর সঙ্গে কথা বললেই প্রেম হয়ে যায় নাকি। সামিরা যদি আমাকে সে রকম অবস্থায় দেখে, বলুক আমার সামনে এসে।’

শাবনূর বলেন, ‘সামিরার কাছে শুনেছি, সালমান মারা যাওয়ার আগে আরও দুবার আত্মহত্যা করতে চেয়েছিল। তখনো কি তাহলে আমার জন্য আত্মহত্যা করতে চেয়েছিল? আসলে সালমানের মৃত্যু কীভাবে হয়েছে, তা আমরা কেউই জানি না। আমি তো এখন বলব, আমাকে ফাঁসানোর জন্য ষড়যন্ত্র হচ্ছে। অন্য মানুষদের বাঁচাতে আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে।’