অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের বন্দর ইউপি চেয়ারম্যান বরখাস্ত

জন্মনিবন্ধন ও ট্রেড লাইসেন্স বাবদ ৩৩ লাখ ৭২ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার বন্দর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন আহমেদকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। গত সোমবার স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে তাঁকে বরখাস্ত করা হয়। একই সঙ্গে চূড়ান্তভাবে তাঁকে কেন বরখাস্ত করা হবে না, সে বিষয়ে জানতে চেয়ে চেয়ারম্যান বরাবর চিঠি দিয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

এ ছাড়া স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অপর এক স্মারকে আত্মসাৎকৃত টাকা আদায়ের জন্য চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন আহমেদ ও সাবেক সচিব মোহাম্মদ ইউসুফের বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আজ বুধবার বিষয়টি নিশ্চিত করে বন্দর ইউপি চেয়ারম্যান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি আনুষ্ঠানিকভাবে বরখাস্তের কোনো চিঠি পাইনি। তবে অনলাইনে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অফিস আদেশের বিষয়টি জানতে পেরেছি। আমি লিখিতভাবে জবাব দেব। যেহেতু আমি ওই টাকা আত্মসাৎ করিনি, তাই ওই আদেশের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে আইনগত পদক্ষেপ নেব।’

এর আগে জন্মনিবন্ধন ও ট্রেড লাইসেন্স বাবদ ৩৩ লাখ ৭২ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বন্দর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সচিব মোহাম্মদ ইউসুফকে বরখাস্ত করা হয়।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ এই দুই অর্থ বছরের জন্মনিবন্ধন এবং ২০১৭ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত ছয় মাসের ট্রেড লাইসেন্স খাতে আদায় করা অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বন্দর ইউপি চেয়ারম্যান এহসান ও তাঁর সচিব ইউসুফ। এই দুই খাতে ৩৩ লাখ ৭২ হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। ২০১৮ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর এ ঘটনায় অডিট আপত্তি তোলা হয়। পরে তদন্তে নামে স্থানীয় সরকার বিভাগ।

সংস্থাটির তদন্তে উল্লেখ করা হয়, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে জন্মনিবন্ধন ফি বাবদ ৭ লাখ ৭৩ হাজার ৩৮০ টাকা, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে একই খাতে ১৪ লাখ ৩৩ হাজার ৭২০ টাকা এবং ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১১ লাখ ৬৪ হাজার ৯০০ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের তদন্তে এ অভিযোগ প্রমাণিত হলে ওই টাকা আদায়সহ ইউপি চেয়ারম্যান ও সচিবের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসককে। একই সঙ্গে আত্মসাৎকৃত টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

তবে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী এ ঘটনায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইউপি সচিবকে বরখাস্ত করা হলেও চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এমনকি আত্মসাৎকৃত টাকাও আদায় করা হয়নি।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘বন্দর ইউপি চেয়ারম্যানকে সাময়িকভাবে বরখাস্তের কোনো চিঠি আমরা পাইনি। চিঠি পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’