পাঁচ নদীর বুকে অর্ধশত চর

নদী শুকিয়ে চর। সম্প্রতি নড়াইলের কালিয়ার নলীয়া নদীর কলাবাড়িয়ায়।  প্রথম আলো
নদী শুকিয়ে চর। সম্প্রতি নড়াইলের কালিয়ার নলীয়া নদীর কলাবাড়িয়ায়। প্রথম আলো

নড়াইলের মধুমতী, নবগঙ্গা, চিত্রা, কাজলা ও নলিয়া নদীর বুকে ছোট-বড় ৫০–৬০টি চর জেগে উঠেছে। অনেক স্থানে নাব্যতা কমে যাওয়ায় নদীগুলো সরু খালে পরিণত হয়েছে। এতে নদীকেন্দ্রিক অর্ধশতাধিক হাটবাজার বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

 এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯২-৯৩ অর্থবছরে নবগঙ্গা নদীর মাগুরা অংশে (ঢাকা বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন) অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণের ফলে নড়াইলের কয়েকটি নদী নাব্যতা হারায়। বর্ষা মৌসুম না এলে নড়াইলের সঙ্গে মাগুরা, খুলনা, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, বরিশাল ও বাগেরহাট জেলার ১২টি নৌপথে নৌযান চলাচল বন্ধ থাকে। পানি কমে যাওয়ায় মধুমতী নদীপারের ভাটিয়াপাড়া, বকজুড়ি, কালতাসুর,  চরআড়িয়াড়া, ধানাইড়, ইছাখালি, কালনা, মল্লিকপুর, ইতনা, বড়দিয়া, করফা, শুকতইল, যোগানিয়া, জয়নগর, তালা ও মানিকদহ; নবগঙ্গা নদীপারের নলদী, মিঠাপুর, লোহাগড়া, কালনা, কালিয়া, বারইপাড়া, নোয়াগ্রাম ও গাজীরহাট; চিত্রাপারের রতডাঙ্গা, রূপগঞ্জ, মীরাপাড়া, গোবরা, শিঙ্গাশোলপুর, খড়ড়িয়া ও পেড়লী; কাজলা নদীপারের মুলিয়া, তুলারামপুর, গড়েরহাটসহ শতাধিক হাটবাজার বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

বড়দিয়া নৌবন্দরের চিকিৎসক জগদীশ চন্দ্র বলেন, মধুমতী ও নবগঙ্গা নদীর বুকে অসংখ্য চর জেগে ওঠায় বর্তমানে নড়াইলের সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও বাণিজ্যিক কেন্দ্রগুলোর নৌযোগাযোগ বন্ধ হতে চলেছে। মধুমতী নদীর তীরবর্তী ৪০টি হাটবাজার বন্ধের পথে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, কুষ্টিয়ার গড়াই নদের সঙ্গে নড়াইলের মধুমতী, নবগঙ্গা, চিত্রা, কাজলা, নলিয়া নদীর সংযোগ রয়েছে। নড়াইলের সঙ্গে গোপালগঞ্জ, বাগেরহাট, ফরিদপুর, মাগুরা ও খুলনার নৌপথে যোগাযোগ রয়েছে। কিন্তু মাগুরা অংশে (ঢাকা বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন) অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণের ফলে এসব জেলা দিয়ে প্রবাহিত নদীগুলোর নাব্যতা হ্রাস পেয়েছে। নড়াইলের বড়দিয়া নৌবন্দরে আসার পথে অসংখ্য ছোট-বড় চর জেগে উঠেছে। নদীগুলোর কোথাও হাঁটু, কোথাও কোমর বা বুকসমান পানি রয়েছে। আবার অনেক স্থানে ধু ধু বালুচর।

পাউবো নড়াইল কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহ নেওয়াজ তালুকদার বলেন, মধুমতী-নবগঙ্গা নদী খনন, নদীর তীর সংরক্ষণ, খাল খনন, স্লুইসগেট নির্মাণ ও মেরামত এবং কালভার্ট নির্মাণে ৩০০ কোটি টাকা অনুমোদন হয়েছে। এসব কাজের দরপত্রও আহ্বান করা হয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে জনদুর্ভোগ বেশ কিছুটা লাঘব হবে।