ধর্ষণ, অন্তঃসত্ত্বা, গর্ভপাত

দশম শ্রেণির এক ছাত্রীর অভিযোগ, প্রতিবেশী এক তরুণ তাকে ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ করেছেন। মানসম্মানের কথা ভেবে ঘটনাটি সে প্রকাশ করেনি। একসময় সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ার বিষয়টি অনুভব করে। তখন ঘটনাটি তরুণের পরিবারকে জানানো হয়। তরুণের সঙ্গে তার বিয়ের আশ্বাস দেওয়া হয়। এই আশ্বাসে গত ২৫ জানুয়ারি বিয়ের কথা বলে স্কুলছাত্রীকে বাড়ির বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু কাজি অফিসের বদলে একটি ক্লিনিকে নিয়ে তার গর্ভপাত ঘটানো হয়। বিয়েও আর হয়নি।

ঘটনার শিকার ছাত্রীর বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায়। তাদের প্রতিবেশী তরুণ হচ্ছেন উপজেলার একটি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী।

গত শনিবার গিয়ে দেখা যায়, নিজ বাড়িতে একটি অন্ধকারাচ্ছন্ন ঘরে সহানুভূতিহীন অবস্থায় ছাত্রীটি বসে রয়েছে। সে জানায়, প্রতিবেশী তরুণ তাদের বাড়িতে আসা-যাওয়া করতেন। তার সঙ্গে কথাবার্তা হতো। গত বছরের সেপ্টেম্বরে কোনো এক রাতে তাকে ডেকে নিয়ে ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ করেন তরুণ। ঘটনাটি সে লজ্জায় কাউকে বলেনি। তার পরিবার হতদরিদ্র। কিন্তু তরুণটির পরিবার সচ্ছল। সে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়টি দুই পরিবারে জানাজানি হওয়ার পর তরুণের পরিবারের পক্ষ থেকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে মুখ খুলতে বারণ করা হয়।

ছাত্রীটির ভাষ্য, বিয়ে করার কথা বলে ২৫ জানুয়ারি বাড়ি থেকে তাকে নান্দাইলে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু কাজি অফিসের বদলে তাকে নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ফটকের পশ্চিম পাশে অবস্থিত একটি ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার নামে তার শরীরে একটি চেতনানাশক ইনজেকশন প্রয়োগ করেন হাসনা হেনা (৬৬) নামের এক নারী। দুই-তিন ঘণ্টা পর চেতনা ফিরে আসার পর নিজেকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পান। এ অবস্থাতেই তাকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। তবে গর্ভপাতের পর থেকে তাকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছেন ওই তরুণ।

গতকাল সোমবার ওই ক্লিনিকে খোঁজ নিয়ে হাসনা হেনাকে পাওয়া যায়নি। তবে এই ক্লিনিকে নিয়মিত গর্ভপাত ঘটানো হয় বলে আশপাশের লোকজনের অভিযোগ।

গ্রামের বাসিন্দারা জানান, এ ঘটনা নিয়ে সালিস বসিয়েছিলেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. হাসিম উদ্দিন ভূঁইয়া। যোগাযোগ করা হলে তিনি একাধিকবার সালিস করার কথা স্বীকার করেন। তবে বিষয়টি সমাধান করতে পারেননি।

নানা অজুহাতে কালক্ষেপণ করায় স্কুলছাত্রীর চলাফেরা সীমিত ও তার শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় বিপর্যস্ত গোটা পরিবার।

বাড়িতে গিয়ে তরুণকে পাওয়া যায়নি। তাঁর পরিবারের সদস্যরা এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।