করোনা শনাক্তে কিট নেই বিশেষায়িত হাসপাতাল বিআইটিআইডিতে

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) হাসপাতাল। ফাইল ছবি
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) হাসপাতাল। ফাইল ছবি

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিশেষায়িত হাসপাতাল বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেজ (বিআইটিআইডি) হাসপাতালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য ৫০ শয্যার আইসোলেশন ইউনিট খোলা হয়েছে। সংক্রামক রোগ নিয়ে গবেষণা ও চিকিৎসার জন্য প্রতিষ্ঠিত এই হাসপাতালে প্রাথমিকভাবে রোগী শনাক্তকরণের কোনো কিট নেই।

কোনো ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহ হলে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হবে চিকিৎসকদের। চিকিৎসাধীন কোনো রোগী মুমূর্ষু অবস্থায় চলে গেলে তাদের চিকিৎসায় নেই নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ)।

হাসপাতালটি সংক্রামক ব্যাধি চিকিৎসা উপযোগী হলেও মুমূর্ষু রোগীদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করতে হবে। এ কারণে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিলেও রোগীদের ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে।

তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, রোগী শনাক্তের প্রয়োজনীয় কিট চেয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাৎক্ষণিক আইসিইউ সম্ভব নয় বলে কোনো রোগীকে আইসিইউতে নেওয়ার প্রয়োজন হলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে।

গত রোববার চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বি প্রথম আলোকে জানিয়েছিলেন, চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেলে তাঁকে বিআইটিআইডিতে ভর্তি করা হবে।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বিআইটিআইডিতে সরেজমিনে দেখা যায়, পুরোনো ডায়রিয়া হাসপাতালের ভবনটির পশ্চিম পাশে দুটি কক্ষে নারী ও পুরুষের জন্য আলাদা করোনা ব্লক করা হয়েছে। পূর্ব পাশে গতকালও ডায়রিয়া রোগী থাকায় সেখানে পুরোপুরি করোনা রোগী চিকিৎসার উপযোগী করা হয়নি। ওই ভবনের সাতটি কক্ষ রোগীদের জন্য ব্যবহৃত হয়। কক্ষগুলোতে ৫০ শয্যা রয়েছে। পুরোনো ভবনটি নতুন চারতলা ভবন থেকে অন্তত ২০ মিটার দক্ষিণ পাশে কিছুটা নিচু স্থানে। ফলে দুটি ভবন আলাদা। মেডিকেল কর্মকর্তার কক্ষটিকে করা হয়েছে বিশেষ আউটডোর কক্ষ। জ্বর, সর্দি, কাশি, মাথাব্যথা নিয়ে আসা রোগীদের প্রথমে সেখানে পাঠানো হবে।

হাসপাতালটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় সহযোগী অধ্যাপক মো. মামুনুর রশীদকে প্রধান করে চার সদস্যের মেডিকেল বিশেষজ্ঞ বোর্ড গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া হাসপাতালটির চিকিৎসক নাছির উদ্দীনকে প্রধান করে র‌্যাপিড রেসপন্স টিম করা হয়েছে। মো. মামুনুর রশীদ প্রথম আলোকে বলেন, ডায়রিয়া রোগীদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে। ৫০ শয্যার পুরো করোনা ব্লক তৈরি হয়ে যাবে ভবনটিতে। বিশেষ আউটডোরে কোনো ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহ হলে তাঁকে আইসোলেশন ব্লকে পাঠানো হবে। সন্দেহ না হলে সাধারণ চিকিৎসা দেওয়া হবে।

হাসপাতালটির পরিচালক অধ্যাপক এমএ হাসান চৌধুরী বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের ভর্তি করানোর বিষয়ে সিভিল সার্জনের সঙ্গে কথা হয়ে। শুধু বিআইটিআইডি নয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী যে হাসপাতালে যাবে তাঁকে সেখানে চিকিৎসা দেওয়া হবে।

হাসপাতালটির বিভিন্ন রোগ পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সমৃদ্ধ পরীক্ষাগার রয়েছে। করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য কিট পাওয়া গেলে সেখানেও পরীক্ষা করা যেত বলে জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের শনাক্তে দুই ধরনের পরীক্ষা আছে। এর একটি রক্ত পরীক্ষা এবং অন্যটি নাকের স্লেষ্মা, লালা নিয়ে করা হয়।

হাসপাতালের পরিচালক এম এ হাসান চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, দুটি পদ্ধতিতে পরীক্ষা করার লোকবল ও যন্ত্রপাতি রয়েছে হাসপাতালটিতে। কিন্তু কিট নেই। ফলে উভয় ধরনের পরীক্ষার কিট চেয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর ই–মেইল পাঠানে হয়েছে।