রাজধানীতে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে গতকাল রোববার রাতে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে আদিবাসী যুবক অমিত রেমা (২৬) খুন হয়েছেন। আহত হয়েছেন অমিতের সঙ্গে থাকা বন্ধু সোহাগ চিসিম (২৫)। চিকিত্সার জন্য তাঁকে পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।প্রত্যক্ষদর্শী লোকজন জানায়, অমিত রেমা ও সোহাগ নেত্রকোনায় ধর্মীয় অনুষ্ঠান শেষে গতকাল রোববার রাত দেড়টার দিকে কলেজগেট এলাকায় মাইক্রোবাস থেকে নামেন। তাঁরা পায়ে হেঁটে রাজিয়া সুলতানা রোডের বাসায় ফিরছিলেন। বাসার সামনে পৌঁছামাত্র একটি সাদা রঙের প্রাইভেট কার থেকে নেমে চার ছিনতাইকারী তাঁদের পথরোধ করে দাঁড়ায়। পরে ছিনতাইকারীরা আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মানিব্যাগ এবং মুঠোফোন ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে তাঁদের সঙ্গে ছিনতাইকারীদের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। অমিত এক ছিনতাইকারীকে ধরে ফেলেন। অন্য ছিনতাইকারীরা তাঁকে ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য অমিতের বুকের বাঁ পাশে ছোরা ঢুকিয়ে দেয়।পুলিশ জানায়, এ ঘটনার পর গ্রেপ্তার হওয়া ছিনতাইকারী মনিরকে নিয়ে পুলিশ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালায়। বিকেল তিনটার দিকে পুলিশের একটি দল ছিনতাইকারীদের ধরতে সলিমুল্লাহ রোড কবরস্থানে গেলে ছিনতাইকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি করে। জবাবে পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। ১০ মিনিট পর গোলাগুলি থেমে গেলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পায়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় এরশাদ, হাবিব ও মনিরকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) বাচ্চু মিয়া ও মারুফ হোসেন আহত হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের কাছ থেকে চারটি গুলিসহ একটি রিভলবার জব্দ করা হয়েছে।মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ভূঁইয়া মাহবুব হাসান জানান, ছিনতাইকারীরা সোহাগের কাছ থেকে একটি মুঠোফোন মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। অমিত ছিনতাইকারীদের প্রতিহত করার চেষ্টা করলে ছিনতাইকারীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁকে আঘাত করে। এ সময় অমিত ও সোহাগের চিত্কারে আশপাশের লোকজন ও নৈশপ্রহরীরা ছুটে এলে ছিনতাইকারীরা চারটি গুলি করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তিন ছিনতাইকারী গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও মনির নামের এক ছিনতাইকারী গাড়িতে উঠতে পারেনি। স্থানীয় লোকজন তাকে ধাওয়া করে সলিমুল্লাহ রোডের মাঠের পাশে আটক করে গনপিটুনি দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আটক ছিনতাইকারীকে নিজেদের হেফাজতে নেয়।স্থানীয় লোকজন জানায়, সোহাগ চিসিম রাজিয়া সুলতানা রোডের ১০/৯ নম্বর বাড়ির চতুর্থ তলায় দুই বোনের সঙ্গে থাকেন। অমিত তেজগাঁও কলেজের ছাত্র। তিনি পশ্চিম রাজাবাজারে থাকতেন। তাঁর বাবার নাম মহিদ রেমা। গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ধাইরপাড়া টোপাপুরায়।ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, রাত আড়াইটার দিকে লোকজন অমিতকে হাসপাতালে নেয়। জরুরি বিভাগের চিকিত্সকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়। দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।