ঘটা করেই মেয়ের বিয়ে দিলেন সিভিল সার্জন

সিভিল সার্জনের সরকারি বাসভবনে ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছিল ফটক। ছবি: প্রথম আলো
সিভিল সার্জনের সরকারি বাসভবনে ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছিল ফটক। ছবি: প্রথম আলো

করোনাভাইরাস আতঙ্কে জনসমাগম এড়িয়ে চলার সরকারি নির্দেশনা থাকলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সিভিল সার্জন বেশ ঘটা করেই মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। আজ শুক্রবার তাঁর সরকারি বাসভবনে এই আয়োজন করা হয়। তবে সিভিল সার্জন শাহ আলমের ভাষ্য, ঘরোয়া পরিবেশে ২০ থেকে ৩০ জনের আয়োজন করা হয়েছে। জনসমাগম হয়নি।

সদর উপজেলার চিনাইর চাপুইর গ্রামের মোশারফ হোসেন মোল্লার ছেলে ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী মইনুল হোসেনের সঙ্গে সিভিল সার্জনের মেয়ে দন্ত চিকিৎসক শান্নিন আলমের বিয়ে ছিল আজ।

বিয়ের অনুষ্ঠানে যাওয়া কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় তিন থেকে সাড়ে তিন শ অতিথির জন্য খাবারের আয়োজন ছিল।

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলার শহরের অবকাশ এলাকায় সিভিল সার্জনের সরকারি বাসভবনে সরেজমিন দেখা গেছে, প্রধান ফটকে ফুল দিয়ে তৈরি করা হয় তোরণ। বাড়ির ভেতরে প্যান্ডেল করা হয়েছে। একপাশে ১০টি বড় পাত্রে রান্নার কাজ চলছিল।

বেলা দুইটার দিকে জেলার সরকারি কর্মকর্তাদের ডরমিটরি–সংলগ্ন নিয়াজ মুহাম্মদ ফারুকী পার্কে প্রায় আধঘণ্টা অবস্থান করে বেশ কয়েকজন চিকিৎসক, বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি, কয়েকটি হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের অনুষ্ঠানে আসতে দেখা গেছে।

সাংবাদিকদের আনাগোনা দেখে বেলা পৌনে তিনটার দিকে সিভিল সার্জনের বাসার প্রধান ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়। শুধু আমন্ত্রিত অতিথিরা যান। ফটকের বাইরে সিভিল সার্জন নিজের লোকজন দাঁড় করিয়ে দেন। তিনটার দিকে ফটকের বাইরে চেয়ার পেতে নিজেই বসেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতা প্রথম আলোকে জানান, যেখানে জনসমাগম এড়িয়ে চলার বিষয়ে দেশব্যাপী সরকারের নির্দেশনা রয়েছে, সেখানে তিনি ঘটা করে মেয়ের বিয়ের আয়োজন করেছেন। এটা তাঁর উদাসীনতা বলতে হয়।

অনুষ্ঠানে আসা নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন মনে করেন, সিভিল সার্জন এই সময়ে বিয়ের আয়োজনটা বড় করে না করে নিজেদের মধ্যে সেরে ফেলতে পারতেন।

সিভিল সার্জন বলেন, ‘এক মাস আগেই বিয়ের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। গত বৃহস্পতিবার মেয়ের গায়েহলুদ ছিল। কীভাবে মেয়ের বিয়ে বন্ধ করে দিই। তাই খুবই স্বল্প পরিসরে বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে। পরিবারের চারজন চিকিৎসক রয়েছে। তাদেরসহ অনেককেই নিমন্ত্রণ করতে পারিনি। শুধু ২০ থেকে ৩০ জন মানুষ অতিথি হিসেবে আসবে।’

জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান ‘বিষয়টি আমরা শুনেছি। খোঁজ নেব। আমরা কেউই জবাবদিহির ঊর্ধ্বে নই।’

এদিকে বিজয়নগর উপজেলায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত দুটি বিয়ের অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেন।