নিউইয়র্কে আটকা পড়লেন বাংলাদেশিরা

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে চার দেশ ও অঞ্চল বাদে সব আন্তর্জাতিক রুটের ফ্লাইট বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সরকার। ২১ মার্চ (আজ শনিবার) রাত ১২টা থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে।

এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশগামী যাত্রীরা নিউইয়র্কে আটকা পড়েছে। ২০ মার্চ (শুক্রবার) সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাওয়ার পথে এই খবর জেনে হতাশ হয়ে পড়ে যাত্রীরা।

বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এক বার্তায় জানায়, দেশে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) বিস্তার রোধে ২১ মার্চ দিবাগত রাত ১২টা থেকে ৩১ মার্চ রাত ১২টা পর্যন্ত কাতার, বাহরাইন, কুয়েত, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, তুরস্ক, মালয়েশিয়া, ওমান, সিঙ্গাপুর ও ভারত থেকে কোনো শিডিউল আন্তর্জাতিক যাত্রীবাহী বাণিজ্যিক উড়োজাহাজকে দেশের কোনো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামার অনুমতি দেওয়া হবে না।
সরকারের এই ঘোষণায় নিউইয়র্কে আটকা পড়েছে অনেক যাত্রী। জেএফকে এমিরেটসের ফ্লাইটের যাত্রী কান্তম হাসান ক্ষোভের সঙ্গে প্রথম আলোকে বলেন, ‘কোনো পূর্ব নির্দেশনা ছাড়াই হঠাৎ ফ্লাইট বন্ধ ঘোষণা সত্যি মেনে নেওয়া যায় না। আমি বাংলাদেশ থেকে আসার আগেই রিটার্ন টিকিট করে রেখেছিলাম।’
হাসান বলেন, ‘আমার ছেলের পরীক্ষা শেষ হয়েছে, তার কলেজ ছয় মাস বন্ধ ঘোষণা করেছে। তাকে নিয়ে ২০ মার্চ দেশে রওনা হব। বিমানে ওঠার আগের মুহূর্তে জানলাম, বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের এই অবস্থা!
কান্তম হাসান বলেন, ‘আমি আমেরিকায় থাকি না। আমার ছেলে পড়ালেখা করে, তাই তাকে নিয়ে দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য এখানে আসা। আমার মতো অনেক বাংলাদেশি এখন নিউইয়র্কে আটকা পড়েছেন।’
আরেক যাত্রী বলেন, ‘কোনো কিছুর যেন সিস্টেম নেই। আমার সবাই দেশে থাকি। নিউইয়র্কের কনস্যুলেট অফিসও কোনো তথ্য দেয়নি। এমনকি বিমান কর্তৃপক্ষকেও নয়। এখন আমরা থাকব কোথায়? যাব কোথায়?’
ওই যাত্রী বলেন, ‘আমাদের আগে তুরস্কের একটি বিমান যাত্রী নিয়ে বাংলাদেশ যাচ্ছে। কারণ, তাদের মাঝপথে স্বল্প সময়ের বিরতি। কিন্তু এমেরিটাসের ছয় ঘণ্টা বিরতি আছেই বলে যেতে পারলাম না। আমার মতো অনেকেই এখন থাকা-খাওয়া নিয়েও চিন্তায় আছেন।’
বিশ্বের ১৮৫টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। এখন পর্যন্ত ২ লাখ ৮৭ হাজার ২৮৮ জন এই প্রাণঘাতী ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে প্রায় ১১ হাজার ৯০৪ জন। তবে এখন পর্যন্ত চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৯১ হাজার ৯১২ জন।
গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। এরপর থেকেই চীনের বিভিন্ন প্রান্তে করোনার প্রকোপ ছড়িয়ে পড়ে। একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা।
সর্বশেষ যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে ২৭৭ জন মারা গেছেন এবং আক্রান্ত হয়েছেন ১৯ হাজারের বেশি।